15 C
London
October 9, 2025
TV3 BANGLA
আন্তর্জাতিক

তহবিল সংকটে জাতিসংঘের বড় সিদ্ধান্তঃ বিশ্বজুড়ে ১৪ হাজার শান্তিরক্ষী কমানো হচ্ছে

গুরুতর তহবিল সংকটে পড়েছে জাতিসংঘ, যার ফলে সংস্থাটি আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বিশ্বের ৯টি শান্তিরক্ষা মিশন থেকে প্রায় ১৩ থেকে ১৪ হাজার সেনা ও পুলিশ সদস্য কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) জাতিসংঘের একজন সিনিয়র কর্মকর্তার বরাতে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

বর্তমানে জাতিসংঘের বিভিন্ন মিশনে প্রায় ৬০ হাজারের বেশি শান্তিরক্ষী কাজ করছেন। নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে, এতে মোট শান্তিরক্ষীর সংখ্যা এক-চতুর্থাংশের কাছাকাছি কমে যাবে। শুধু সেনা-পুলিশ নয়, অনেক বেসামরিক কর্মীর চাকরিও ঝুঁকির মুখে পড়বে, বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘ সদর দফতরের এক কর্মকর্তা।

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস সতর্ক করে বলেছেন, সংস্থাটি তার ৮০তম বার্ষিকীতে ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ অর্থ সংকটে পড়েছে। তিনি জানান, জাতিসংঘ এখন কার্যকারিতা বাড়ানোর পাশাপাশি ব্যয় সংকোচন ও তহবিল পুনর্গঠনের পথ খুঁজছে।

বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের সবচেয়ে বড় অর্থদাতা হলো যুক্তরাষ্ট্র, যারা মোট বাজেটের প্রায় ২৬ শতাংশ দেয়। দ্বিতীয় স্থানে থাকা চীন দেয় প্রায় ২৪ শতাংশ অর্থ। তবে যুক্তরাষ্ট্র এখনো জাতিসংঘে ২.৮ বিলিয়ন ডলার বকেয়া রেখেছে, যা তহবিল ঘাটতির মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নতুন অর্থবছর শুরু হওয়ার আগেই দেশটির ১.৫ বিলিয়ন ডলার বকেয়া ছিল, যার সঙ্গে সম্প্রতি আরও ১.৩ বিলিয়ন ডলার যোগ হয়েছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ৬৮০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত আগস্টে ২০২৪ ও ২০২৫ সালের জন্য বরাদ্দকৃত ৮০০ মিলিয়ন ডলারের শান্তিরক্ষা তহবিল বাতিল করেন। তার প্রশাসনের বাজেট দপ্তর ২০২৬ সাল থেকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের সকল তহবিল বন্ধ করার প্রস্তাব দিয়েছে। তাদের দাবি, “মালি, লেবানন এবং কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের মিশনগুলো প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।”

জাতিসংঘের এই সিদ্ধান্তে দক্ষিণ সুদান, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, লেবানন, কসোভো, সাইপ্রাস, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, পশ্চিম সাহারা, গোলান মালভূমি (ইসরাইল-সিরিয়া সীমান্ত) এবং আবিয়াই (দক্ষিণ সুদান-সুদান সীমান্ত) এলাকার শান্তিরক্ষা মিশনগুলো প্রভাবিত হবে।

এই সব মিশনের মধ্যে বেশ কয়েকটিতে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর উপস্থিতি রয়েছে, ফলে সিদ্ধান্তটি বাংলাদেশের ওপরও প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ, যেখানে প্রায় ৬ হাজারের বেশি সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।

জাতিসংঘের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যদি দ্রুত তহবিল ঘাটতি পূরণ না হয়, তবে ভবিষ্যতে আরও মিশন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বকেয়া অর্থ না মেটানো পর্যন্ত জাতিসংঘের আর্থিক সংকট আরও গভীর হবে এবং এর প্রভাব পড়বে বিশ্ব শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ওপর সরাসরি।

সূত্রঃ রয়টার্স

এম.কে
০৯ অক্টোবর ২০২৫

আরো পড়ুন

কাতারের পর ইয়েমেনে ইসরায়েলি হামলাঃ ৯ নিহত, আহত শতাধিক

অভিবাসন আইন কঠোর করতে যাচ্ছে গ্রিস

মারা গেছেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং