TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতি বদলে দিতে পারে বাংলাদেশ-চীন রেল যোগাযোগ পরিকল্পনা

বাংলাদেশ ভারতকে পাশ কাটিয়ে সরাসরি চীনের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপনের পরিকল্পনায় অগ্রসর হচ্ছে। সাম্প্রতিক প্রতিবেদনগুলোতে উঠে এসেছে, এই নতুন রেলপথের জন্য মিয়ানমারের মধ্য দিয়ে একটি বিকল্প করিডোর বিবেচনা করা হচ্ছে। এর ফলে দীর্ঘদিনের ভারত-নির্ভর রেল সংযোগের বাইরে গিয়ে বাংলাদেশ নতুন অর্থনৈতিক ও কৌশলগত পথ খুলে দিতে পারে।

 

ভারত-কেন্দ্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা বহুদিন ধরেই বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণের প্রধান বাধা হিসেবে দেখা হচ্ছিল। বিশেষ করে ভারতের বিভিন্ন আপত্তি ও অনুমতির জটিলতার কারণে চীন বা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে সরাসরি স্থল যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। নতুন প্রস্তাবিত রুটটি কার্যকর হলে বাংলাদেশ ভারতকে এড়িয়ে মিয়ানমারের মধ্য দিয়ে চীনের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত হতে পারবে।

মিয়ানমারের ভিতর দিয়ে সম্ভাব্য রেলপথকে বাংলাদেশের জন্য একটি ‘স্ট্র্যাটেজিক গেমচেঞ্জার’ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই রুট কার্যকর হলে চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজারের সাথে বাংলাদেশের সরাসরি বাণিজ্যিক সংযোগ তৈরি হবে। একইসঙ্গে বন্দর–নির্ভর বাণিজ্যের চাপ কমবে, বাড়বে আঞ্চলিক সরবরাহ ব্যবস্থা ও লজিস্টিক সুবিধা।

প্রস্তাবিত রেলপথটি চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (BRI)-এর সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। চীন এশিয়ার ভেতর যোগাযোগের নতুন করিডোর গড়ার লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করছে। রেল যোগাযোগ যুক্ত হলে দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও গভীর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ভারত-বাংলাদেশ রেল যোগাযোগ বর্তমানে ভারতের উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। নেপাল ও ভুটান ছাড়া অন্য কোনো দেশের সঙ্গে স্থল যোগাযোগে ভারতের অনুমতির উপর নির্ভর করতে হয়। ফলে বাণিজ্যিক সীমাবদ্ধতা কাটাতে বাংলাদেশ বিকল্প রুট খুঁজছিল। নতুন করিডোর হলে ভারতীয় সীমান্ত এড়িয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের নতুন সুযোগ তৈরি হবে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই উদ্যোগ আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের বাড়তে থাকা প্রভাবের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের সহযোগিতা ভারতকে নতুন কৌশল পুনর্বিবেচনায় বাধ্য করতে পারে। এমনকি নতুন ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণে পাকিস্তান ও অন্যান্য আঞ্চলিক খেলোয়াড়দের ভূমিকাও পুনঃনির্ধারিত হতে পারে।

যদিও প্রকল্পটি এখনও প্রাথমিক পরিকল্পনা পর্যায়ে রয়েছে, তবুও সাম্প্রতিক আলোচনা ও প্রকাশিত তথ্য থেকে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে, বাংলাদেশ-চীন কৌশলগত অংশীদারিত্বের কারণে এর বাস্তবায়ন সম্ভবনা বেশ উজ্জ্বল। ডিসেম্বর ২০২৩ থেকে নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে এই রেল যোগাযোগকে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক দিক পরিবর্তনের সম্ভাব্য বড় পদক্ষেপ হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়েছে।

এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ শুধু ভারত-নির্ভরতা কমাবে না, বরং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে একটি নতুন বাণিজ্যিক করিডোরের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে।

সূত্রঃ স্যোশাল মিডিয়া

এম.কে

আরো পড়ুন

থাকেন ভারতে, বেতন তোলেন বাংলাদেশে!

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিঃ বার্সেলোনার পর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের শোকবার্তা

ইন্টারনেট নিয়ে জাতির সঙ্গে মিথ্যাচার করেছেন পলক: তদন্ত প্রতিবেদন