‘ডিপোর্ট’ বা জোর করে ফেরত পাঠানোর সংখ্যা বাড়ানো, আশ্রয় প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করা এবং নগদ অর্থের পরিমাণ কমানো—২০২৪ সাল থেকে এভাবে আশ্রয়প্রার্থীদের নিরুৎসাহিত করতে চায় জার্মানি৷ একই সঙ্গে দক্ষ কর্মীদের জন্য অভিবাসন প্রক্রিয়া সহজও করতে চায় দেশটি৷
নতুন বছরের অভিবাসন নীতির ক্ষেত্রে সরকারের অবস্থান সম্পর্কে ইঙ্গিত দিয়েছেন চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস৷ ডিসেম্বরে সংবাদমাধ্যম ডেয়ার স্পিগেলকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আশ্রয় আবেদন বাতিল হওয়া অভিবাসীদের ডিপোর্টের পক্ষে নিজের অবস্থান জানিয়েছিলেন তিনি৷
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসে সাত হাজার ৮৬১ জনকে ডিপোর্ট করেছে জার্মানি৷ এ সংক্রান্ত একটি আইনের সংশোধনও করেছে দেশটি, তাই আশা করা হচ্ছে ডিপোর্টের সংখ্যা সামনের দিনগুলোতে আরো বাড়বে৷
আশ্রয় আবেদন বাতিল হওয়া অভিবাসীদের ডিপোর্টের আগে ২৮ দিন আটক রাখার অনুমতি দেয়া হয়েছে আইনে৷ কাউকে আটক করার ক্ষেত্রে তার ঘরে তল্লাশি চালানোর অনুমতিও দেয়া হয়েছে পুলিশকে৷
মানবপাচারসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত এবং সন্দেহভাজনদেরও দ্রুত ডিপোর্ট করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেজার৷
জর্জিয়া, মলডোভা, কেনিয়া, কলম্বিয়া, উজবেকিস্তান এবং কিরগিজস্তানের সঙ্গে অভিবাসন বিষয়ক চুক্তির আলোচনা করছে জার্মানি, যদিও জার্মানিতে সবচেয়ে বেশি আশ্রয়প্রার্থী এসেছেন সিরিয়া, আফগানিস্তান এবং তুরস্ক থেকে৷ তবে এসব দেশের সঙ্গে চুক্তির উদ্দেশ্য হচ্ছে, দেশগুলোকে ‘নিরাপদ দেশ’ স্বীকৃতি দেয়া৷ এর ফলে, এসব দেশ থেকে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের ফিরিয়ে দিতে পারবে জার্মানি৷ গত নভেম্বরে জর্জিয়া এবং মলডোভাকে ‘নিরাপদ দেশ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে জার্মানি৷
তুরস্কের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের চুক্তি নবায়নের বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে৷ জার্মানিও চায় চুক্তিটি নবায়ন হোক৷ কারণ, ওই চুক্তির মধ্য দিয়ে তুরস্ক থেকে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের ফিরিয়ে দেয়ার বিষয়টি সহজতর হবে৷
আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য যখন কঠোর সব ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে, তখন দক্ষ কর্মীদের কাছে জার্মানিকে আকর্ষণীয় করে তুলতে নেয়া হচ্ছে নানা পদক্ষেপ৷
ভাষার দক্ষতা এবং পেশাগত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে যোগ্য বিদেশিদের পয়েন্ট সিস্টেমে এক বছরের ভিসা দেবে জার্মানি৷ এই সময়টায় তাকে এ দেশে চাকরি খোঁজার সুযোগ দেয়া হবে৷ আয়ের সীমাও কমানো হয়েছে, ফলে পরিবারের সদস্যদেরও জার্মানিতে আনার প্রক্রিয়াটি সহজ হবে৷
আগামী মার্চ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশের মানুষেরাও সরাসরি জার্মানিতে আসতে পারবেন এবং তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে কাজ করতে পারবেন৷
পশ্চিম বলকান অঞ্চলের মানুষের জন্য বিশেষ অভিবাসন কোটা জুনে দ্বিগুণ করে ৫০ হাজারে উন্নীত করা হবে বলে সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়৷
সূত্রঃ ডেয়ার স্পিগেল
এম.কে
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪