7.2 C
London
December 22, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)শীর্ষ খবর

দিল্লির আবদারে শিখদের ‘দমনে’ তৎপর যুক্তরাজ্য

কানাডায় খালিস্তান বিচ্ছিন্নতাবাদী শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার খুন হওয়ার ঘটনায় ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সংশ্লিষ্টতা অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগের সপক্ষে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে বলে দাবি করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। পরবর্তী সময় সেই দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই ঘটনায় পশ্চিমের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পশ্চিমের অনেকে দেশেই বিপুলসংখ্যক শিখ অভিবাসী রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম যুক্তরাজ্য। এখন যুক্তরাজ্যসহ অন্য দেশে প্রভাবশালী কয়েকজন শিখের মৃত্যু নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যে শিখদের আলাদা রাষ্ট্র খালিস্তান প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার হিসেবে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন অবতার সিং খন্দ (৩৫)। চলতি বছরের জুনে বার্মিংহামে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে তার মৃত্যু হয়। ঘনিষ্ঠজনদের সন্দেহ, তার মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না। এর পেছনে অসৎ উদ্দেশ্য ছিল।

যুক্তরাজ্যের পশ্চিম মিডল্যান্ড পুলিশ বলছে, তারা এ ঘটনা ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে এবং সন্দেহজনক কিছু পায়নি। এ ঘটনার পুনঃতদন্তের প্রয়োজন নেই।

তবে ব্রিটিশ শিখরা দীর্ঘদিন ধরেই নানামুখী চাপে থাকার অভিযোগ করে আসছেন। কারণ, ভারত সরকার শিখ ‘চরমপন্থীদের’ দমন করার জন্য যুক্তরাজ্য সরকারকে বেশ কয়েকবার আহ্বান করেছে।
স্কটল্যান্ডের ডাম্বারটন শহরের বাসিন্দা গুরপ্রীত জোহাল পেশায় আইনজীবী ও শ্রম উপদেষ্টা। তিনি বলেন, তার পরিবারের সঙ্গে যা ঘটেছে, সেই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায়ই তিনি রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন।

ছয় বছর আগে গুরপ্রীতের ভাই জগতার বিয়ে করার জন্য ভারতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন। এখন তিনি বিনা বিচার জেলা খাটছেন। জগতার খালিস্তানপন্থী ও শিখ অধিকারকর্মী হিসেবে সুপরিচিত।

জোহালের পরিবার বলে, পাঞ্জাবের রামি মন্ডি নামে একটি শহরে জগতারকে অপরিচিত একটি গাড়িতে জোর করে তোলা হয়। এর পর থেকে জগতার বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ভারতের কারাগারেই আছেন।

জাস্টিন ট্রুডো ঠিক কাজ করেছেন উল্লেখ করে গুরপ্রীত জোহাল বলেন, ‘কানাডার প্রধানমন্ত্রী তার নাগরিকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, যেখানে যুক্তরাজ্য সরকার ব্যর্থ হয়েছে।’

মানবাধিকার সংস্থা রিপ্রিভ বলে, ভারতে জোহালের গ্রেফতারের পেছনে ব্রিটিশ সিকিউরিটি এজেন্সির হাত থাকার যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে।

জগতারের ঘটনায় ব্রিটিশ শিখ কমিউনিটি ক্ষুব্ধ। এমনকি কোনো ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়া এবং বৈষম্যমূলকভাবে আটক করা হয়েছে উল্লেখ করে জগতার জোহালের মুক্তি চেয়েছে জাতিসংঘের একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ। যুক্তরাজ্য সরকার এ ক্ষেত্রে কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে।

গুরপ্রীত বলেন, ‘মনে হচ্ছে, যুক্তরাজ্য সরকারের কাছে নাগরিকদের চেয়ে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, জগতার জোহালের মুক্তি দাবি করে কোনো লাভ হবে না, বরং পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, তিনি জোহালের মামলার যত দ্রুত সম্ভব সমাধান দেখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

উল্লেখ্য যে, ভারত ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বেশ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। চলতি বছরের মার্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শিখ অধিকার ও খালিস্তানপন্থী বিক্ষোভকারীরা লন্ডনে ভারতীয় হাইকমিশনে ভাঙচুর চালানোর ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ভারত সরকার বারবার ব্রিটেনকে বিচ্ছিন্নতাবাদী বা চরমপন্থীদের দমন করার আহ্বান জানিয়ে আসছে।

এম.কে
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

 

আরো পড়ুন

খাদ্যদ্রব্যের দাম আরও বাড়ার সতর্কতা

হামাসের সন্ত্রাসী হামলার সমর্থনকারীদের সতর্ক করল যুক্তরাজ্য সরকার

গরমে লন্ডন জুড়ে যত্রতত্র অগ্নিকাণ্ড

অনলাইন ডেস্ক