বিশেষ প্রতিনিধি: ঘনবসতিপূর্ণ চা বাগানের মধ্যে চা শ্রমিকদের করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে ফেলে সিলেটের লাক্কাতুরার স্কুলমাঠে পশুর হাট বসায় প্রশাসন। গরুর বসানোর পরই প্রতিবাদে নামে ওই স্কুলের শিক্ষার্থী ও চা শ্রমিকরা। এ নিয়ে প্রতিবাদী মানববন্ধন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট। মানববন্ধনে চা বাগানের ভেতর স্কুলমাঠ থেকে হাট সরানোর সঙ্গে সঙ্গে মুজিববর্ষে রোপণ করা গাছ রক্ষার দাবি জানানো হয়।
শেষ মূহুর্তে হাট সরিয়ে নেয়া হলেও মাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মুজিববর্ষ উপলক্ষে সদ্য রোপিত ৫ শতাধিক ফলদ ও বনজ গাছ। স্কুল মাঠ ও ভবনেরও ক্ষতি হয়েছে এ হাটের কারণে।
ঈদ পরবর্তী সময়ে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়,গরুর হাটের কারণে স্কুলের মাঠের গাছগুলো এখন জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে। মাঠ ছাত্রদের খেলার উপযুক্ত অবস্থথায় আর নেই। গরুর হাটের কারণে যে ক্ষতি হয়েছে বা গর্তের সৃষ্টি হয়েছে সেইগুলোও হাট কর্তৃপক্ষ ভরাট করে দেন নাই। যে কয়েকটি গাছ টিকে আছে তাও মৃতপ্রায়।
এ প্রসঙ্গে বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম কিম টিভিথ্রি বাংলাকে বলেন, একদিকে গাছ লাগানোর কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী, অন্যদিকে লাগানো গাছ বিনষ্ট করার পাঁয়তারা করবে স্থানীয় প্রশাসন। সরকারকে আগে ঠিক করতে হবে স্কুলমাঠে শিক্ষার্থীদের দিয়ে গাছ লাগানোর শিক্ষা দেওয়া হবে, নাকি স্কুলমাঠ গরু-ছাগলের হাটে পরিণত করা হবে?
সিলেট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এইচ এম জহির ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এখানে পশুর হাট বসানোর ব্যাপারে আমরা আপত্তি জানিয়েছিলাম। কিন্তু কেউ তা শোনেনি। সবচেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে গাছগুলোর জন্য। পাশাপাশি ফটকের ভেতরে পশুর হাট হওয়ায় বিদ্যালয় ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এখন স্থানীয় জনসাধারণ ও স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মতে, হাটের ইজারা দেওয়ার আগে কিছু শর্ত আরোপ করা উচিত ছিল প্রশাসনের, যাতে গাছ ও স্কুলের কোনো ক্ষতি না হয়। আর এমনটা ঘটলে তা যেন ঈদের পর মাঠ ভরাট করে দেওয়া হয়, অথবা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়।
দেশবাসীর কাছে তাদের প্রশ্ন, স্কুল মাঠ ও গাছের এই ক্ষতিগুলোর পিছনে দোষটা আসলে কার? শর্ত ছাড়া ইজারা দেওয়া প্রশাসনের, নাকি যারা ইজারা নিয়েছিলেন তাদের?
১৯ আগস্ট ২০২০
মোহায়মীন করিম চৌধুরী, বিশেষ প্রতিনিধি (সিলেট)
এমকেসি/এনএইচটি