15.7 C
London
November 5, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

দ্বিতীয়বারও আশ্রয় পেল না ইরানি নাগরিক, ফ্রান্সে ফেরত পাঠিয়ে কঠোর বার্তা দিল হোম অফিস

এক ইরানি নাগরিককে দ্বিতীয়বারের মতো ফ্রান্সে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার। ওই ব্যক্তি ছোট নৌকায় করে পুনরায় যুক্তরাজ্যে প্রবেশের পর আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন, কিন্তু হোম অফিস তার আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তি করে আবারও তাকে ফ্রান্সে ফেরত পাঠায়।

বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ এক বিবৃতিতে জানান, যুক্তরাজ্য-ফ্রান্সের “ওয়ান ইন, ওয়ান আউট” প্রত্যাবর্তন চুক্তি কার্যকর রাখতে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি বলেন, “যে কেউ একবার ফেরত পাঠানোর পর আবার যুক্তরাজ্যে আসার চেষ্টা করবে, সে সময় ও অর্থ নষ্ট করছে। আমার বার্তা স্পষ্ট—আপনি ফিরলে, আমরা আবার ফেরত পাঠাব।”

ওই ব্যক্তি প্রথমবার যুক্তরাজ্যে আসেন ৬ আগস্ট এবং ১৯ সেপ্টেম্বর তাকে ফ্রান্সে ফেরত পাঠানো হয়। পরে ১৮ অক্টোবর তিনি আবার ছোট নৌকায় চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে আসেন এবং আশ্রয়ের আবেদন করেন। যদিও মানবপাচারের শিকার হওয়ার কিছু ইঙ্গিত পাওয়া যায়, হোম অফিস ২১ অক্টোবর তার পুনঃপ্রবেশের বিষয়ে ফ্রান্সে রিডমিশন অনুরোধ পাঠায়, যা ২৪ অক্টোবর গ্রহণ করা হয়।

তার দাসত্বসংক্রান্ত আবেদন “ন্যাশনাল রেফারেল মেকানিজম”-এ পাঠানো হলেও ২৭ অক্টোবর তা প্রত্যাখ্যাত হয়। ফেরত পাঠানোর আগে তার মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির কারণে প্রতি ঘণ্টায় কল্যাণ যাচাইয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ইরানি নাগরিকটি দাবি করেছেন, ফ্রান্সে চোরাকারবারিদের হাতে তিনি নির্যাতিত হয়েছিলেন এবং জীবননাশের আশঙ্কায় যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চান।

তিনি দ্য গার্ডিয়ান-কে বলেন, “যদি ফ্রান্স আমার জন্য নিরাপদ হতো, আমি কখনো যুক্তরাজ্যে আসতাম না।” তিনি এখন অন্য কোনো নিরাপদ দেশে আশ্রয় চাচ্ছেন। মামলার নথিতে হোম অফিস কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন যে, ফ্রান্সে মানসিক স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ থাকলেও “ক্ষমতা ঘাটতি ও ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা” কারণে তা বাস্তবে সীমিত।

সরকার জানায়, এখন পর্যন্ত যুক্তরাজ্য-ফ্রান্স প্রত্যাবর্তন চুক্তির আওতায় ৯৪ জনকে যুক্তরাজ্য থেকে ফ্রান্সে ফেরত পাঠানো হয়েছে, বিপরীতে ৫৭ জনকে বৈধভাবে যুক্তরাজ্যে আনা হয়েছে। মন্ত্রণালয় বলছে, এই প্রক্রিয়া আরও জোরদার করা হবে।

এদিকে ফরাসি সংবাদমাধ্যম লে মোঁদে জানিয়েছে, ফ্রান্স প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া ধীর করছে যাতে সীমান্ত নিরাপত্তা বিষয়ক ৪৭৬ মিলিয়ন পাউন্ডের স্যান্ডহার্স্ট চুক্তি নবায়ন নিয়ে আলোচনায় বাড়তি প্রভাব তৈরি করা যায়। চুক্তিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী মার্চে।

ফরাসি ইউনিয়নগুলোও ইংলিশ চ্যানেলে নৌকা আটকানোর পরিকল্পনার বিরোধিতা করছে, যেটি গত গ্রীষ্মে কিয়ার স্টারমার ও এম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁর মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আলোচিত হয়েছিল। ইউনিয়নগুলোর দাবি, এ ধরনের অভিযান জীবনহানির ঝুঁকি বাড়ায়।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ছোট নৌকায় যুক্তরাজ্যে এসেছিলেন ৩৬,৮১৬ জন অভিবাসী। ২০২৫ সালের ২২ অক্টোবর পর্যন্ত সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬,৮৮৬—গত বছরের তুলনায় ৭০ জন বেশি। খারাপ আবহাওয়ার কারণে গত ১২ দিন কোনো নৌযাত্রা হয়নি।

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে

আরো পড়ুন

প্রতিদিন লাশ দেখতে দেখতে যুক্তরাজ্যের সীমান্ত রক্ষীরা মানসিক ট্রমায় আক্রান্ত

রাস্তায় এক ব্যক্তিকে ঘুষি মেরে বরখাস্ত হলেন ব্রিটিশ এমপি

ব্রিটেনে অস্থায়ী ভিসায় সন্তান আনার ক্ষেত্রে নতুন শর্ত