আয়ের ভিন্নতার কারণে পরিবারের সদস্যরা একসাথে বসবাস করতে না পারার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যার কারণে বিভিন্ন পরিবার আইনী পদক্ষেপ নেয়ার হুমকি দিয়েছে। নতুন আইনকে তাদের দৃষ্টিতে নিষ্ঠুর ও অমানবিক বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
নতুন নিয়ম যদি আইন হিসাবে রুপান্তরিত হয় তাহলে আগামী বছর হতে কেবলমাত্র ৩৮,৭০০ পাউন্ড উপার্জনকারী ব্যক্তিরা তাদের পরিবারের সদস্যদের ব্রিটেনে আনার আবেদন করতে পারবেন। আগের নিয়ম অনুযায়ী যা ১৮,৬০০ পাউন্ড ছিল।
ইমিগ্রেশন বিধি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিদের সংস্থা রিইউনাইট ফ্যামিলি একটি আইন সংস্থা লে ডে’কে নিয়োগ দিয়েছে। রিইউনাইট ফ্যামেলি আইনি সংস্থাটিকে স্বরাষ্ট্রসচিব জেমস ক্লেভলি দ্বারা ঘোষিত পরিবর্তনগুলি চ্যালেঞ্জ করার উপায় অন্বেষণ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়।
নতুন আইন দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন এমন কয়েকশো মানুষ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানকে জানায়, যে পরিমাণ বাৎসরিক উপার্জন থাকলে বিদেশি স্বামী-স্ত্রীর জন্য আবেদন করা যায় সেই পরিমান অর্থ উপার্জন সম্ভব না হলে তাদের যুক্তরাজ্য ছেড়ে যেতে হবে। তথ্যমতে জানা যায় এইসব মানুষদের মধ্যে অনেকেই কেয়ার এবং সোশ্যাল ওয়ার্কের মতো গুরুতর শ্রমিক ঘাটতি সেক্টরে কাজ করেন। যার ফলে পরিবারের জন্য দেশত্যাগ করলে শ্রমিক সংকট দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
হোম অফিসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, উচ্চতর বেতনের প্রয়োজন তখনই হয় যখন বিদেশ থেকে কেউ স্বামী বা স্ত্রীকে আনতে চায়। সরকার চায় আর্থিকভাবে যোগ্য ব্যক্তি বিদেশি স্বামী-স্ত্রী নিয়ে আসুক নতুবা এতে রাষ্ট্রের উপর চাপ সৃষ্টি হয়। প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়েছেন যে যুক্তরাজ্যে বর্তমান স্তরের অভিবাসনের হার অনেক বেশি। যা নেট মাইগ্রেশনকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যাচ্ছে তাই সরকার এর রাশ টেনে ধরতে চায়।
নতুন একটি গবেষণায় দেখা যায়, দ্বিগুণ এই থ্রেশহোল্ড নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করবে। অঞ্চলভেদে এই বিতর্ক উত্তর-দক্ষিণে ভাগ হয়ে যেতে পারে। দুই তৃতীয়াংশ লোক এখন চাইলেই নিজের বিদেশি স্বামী-স্ত্রীকে আর ইউকেতে আনতে পারবে না। শতাংশ হিসাবে গেলে প্রায় ৬০% লোক এই বিষয় বহন করতে পারবে না যাদের মধ্যে উত্তর-পূর্ব ইংল্যান্ডের লোক বেশি হবে কারণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বসবাস সেদিকেই বেশি।
তাছাড়া উত্তর-পূর্ব ইংল্যান্ড, ইয়র্কশায়ার, উত্তর-পশ্চিম ইংল্যান্ড, পূর্ব মিডল্যান্ডস, ওয়েলস এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডের লোকেরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে এবং দক্ষিণ-পূর্ব ও সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে দরিদ্রতার কারণে।
ক্যানটারবেরির আর্চবিশপ, জাস্টিন ওয়েলবি থেকে শুরু করে অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিরাই এই নতুন আইনের বিরোধিতা করেছেন। তাছাড়া লেবার দলের ছায়া স্বরাষ্ট্রসচিব ইয়ভেট কুপার বলেছেন, নতুন আইন আসার আগেই এই আইনের আওতার বাইরে থাকার জন্য হঠাৎ করে বিবাহে তাড়াহুড়ো বৃদ্ধি পেতে পারে।
এম.কে
১৮ ডিসেম্বর ২০২৩