নাইজেল ফারাজ ইন্ডিফিনিট স্টে বাতিলের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। রিফর্ম ইউকের এই নীতি বাস্তবায়িত হলে যুক্তরাজ্যে বৈধভাবে বসবাসরত হাজারো মানুষকে কঠোর নতুন নিয়ম মেনে চলতে না পারলে বহিষ্কারের মুখোমুখি হতে হবে।
ফারাজ দাবি করেছেন, আগামী তিন থেকে চার বছরে প্রায় আট লাখ মানুষ ইন্ডিফিনিট লিভ টু রিমেইন (ILR) পাওয়ার যোগ্য হবেন। তার অভিযোগ, এদের অধিকাংশ তরুণ ও অদক্ষ, যারা রাষ্ট্রের উপর বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, ব্রিটেন বিশ্বের “ফুড ব্যাংক নয়” এবং বিদেশিদের জন্য কল্যাণ ভাতা দেওয়ার দায়িত্বও তার নয়।
বর্তমানে পাঁচ বছর বৈধভাবে যুক্তরাজ্যে কাজ ও বসবাস করলে অভিবাসীরা ILR-এর জন্য আবেদন করতে পারেন এবং এক বছর পর নাগরিকত্বের সুযোগ পান। কিন্তু ফারাজের পরিকল্পনা অনুযায়ী ILR পুরোপুরি বাতিল করে সবাইকে নতুন করে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। নতুন ভিসায় উচ্চ বেতনের শর্ত আরোপ করা হবে, যা টাইমস-এর তথ্যমতে বছরে প্রায় ৬০ হাজার পাউন্ড হতে পারে।
এ ভিসাধারীরা এনএইচএস বা কল্যাণভাতা পাবেন না, তাদের উন্নত ইংরেজি জানতে হবে এবং পরিবার সদস্য আনার ক্ষেত্রেও থাকবে কঠোর শর্ত। নাগরিকত্ব চাইলে অন্তত সাত বছর অপেক্ষা করতে হবে, সাবলীল ইংরেজি প্রমাণ করতে হবে এবং পূর্বের নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে হবে।
ফারাজ দাবি করেছেন, এ নীতি £২৩৪ বিলিয়ন সাশ্রয় করবে, যদিও এ সংখ্যা একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্কের প্রত্যাহারকৃত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছে। সমালোচকরা বলেছেন, তার এ হিসাব অবিশ্বস্ত এবং বিভাজন সৃষ্টির উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।
লেবার পার্টি এ পরিকল্পনাকে অবাস্তব, অকার্যকর ও বিভাজনমূলক আখ্যা দিয়েছে। লন্ডনের মেয়র সাদিক খান বলেছেন, বৈধভাবে বসবাসরত ও কাজ করা মানুষকে বহিষ্কারের হুমকি দেওয়া সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, হাজারো লন্ডনবাসী ILR নিয়ে বৈধভাবে অবদান রাখছেন শহরের অর্থনীতি ও সমাজে।
ডাউনিং স্ট্রিটও ফারাজের প্রস্তাবের সমালোচনা করে জানিয়েছে, তিনি “ইচ্ছাকৃতভাবে বিভাজন” সৃষ্টি করতে চাইছেন। লেবারের একটি সূত্র বলেছে, ফারাজের দাবি ইতিমধ্যেই “ভেঙে পড়েছে”, কারণ পরিসংখ্যান ও নীতির কোনো বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।
অন্যদিকে ফারাজ এখনও ইউক্রেন, হংকং বা আফগানিস্তান থেকে বিশেষ ভিসা রুটে আসা শরণার্থীদের ব্যাপারে তার পরিকল্পনা স্পষ্ট করেননি। এতে অভিবাসী পরিবারগুলো চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছে।
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫