বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনা যখন বাড়ছে, ঠিক তখনই আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার ছেলে ও সাবেক তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের মন্তব্য নতুন করে বিতর্ক তৈরি করেছে। ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের লক্ষ্য নির্বাচন বন্ধ করা এবং এই আন্দোলন ঢাকায় সহিংসতায় রূপ নিতে পারে।
সাক্ষাৎকারে জয় বলেন, “এই মুহূর্তে আমাদের লক্ষ্য হলো নির্বাচন বন্ধ করা।” তার বক্তব্য অনুযায়ী, নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে নামবে আওয়ামী লীগ এবং রাজধানীকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে উঠতে পারে। তিনি আরও বলেন, বর্তমান বাস্তবতায় শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের সম্ভাবনা কম এবং আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নিতে পারে।
এই মন্তব্য এমন সময়ে এসেছে, যখন নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ পরিকল্পিত অরাজকতা ও সহিংসতার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। তাদের মতে, সাম্প্রতিক কিছু হামলার অভিযোগ ও নাশকতার শঙ্কা দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকির ইঙ্গিত দিচ্ছে। কেউ কেউ দাবি করছেন, এসব ঘটনার পেছনে সংগঠিত পরিকল্পনা থাকতে পারে বলেও সন্দেহ করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক অঙ্গনে জয়ের বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিরোধী দলগুলো এটিকে নির্বাচন বানচালের স্পষ্ট ইঙ্গিত হিসেবে দেখছে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য হুমকি বলে অভিহিত করছে। তাদের দাবি, একজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের সদস্যের এমন প্রকাশ্য মন্তব্য পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলতে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনের প্রাক্কালে এ ধরনের বক্তব্য প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করবে। তাদের আশঙ্কা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বাড়তি প্রস্তুতি প্রয়োজন হতে পারে।
এদিকে, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জয়ের মন্তব্য নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো ব্যাখ্যা বা অবস্থান আসেনি। তবে দলটির একাধিক নেতা দাবি করেছেন, নির্বাচন ঘিরে চলমান সংকটের জন্য সরকার ও প্রশাসনের ভূমিকাই দায়ী।
সব মিলিয়ে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিবেশে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া জয়ের বক্তব্য নতুন করে অনিশ্চয়তা ও উদ্বেগ বাড়িয়েছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, এই মন্তব্য পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে এবং আগামী দিনগুলোতে রাজনৈতিক অস্থিরতার ঝুঁকি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
সূত্রঃ ইন্ডিয়া টু’ডে
এম.কে

