19.9 C
London
August 16, 2025
TV3 BANGLA
আন্তর্জাতিক

নির্বাসনের অপেক্ষায় থাকা অভিবাসীদের পায়ে চিপ পরাবে গ্রিস

প্রত্যাখ্যাত আশ্রয়প্রার্থীদের মধ্যে যাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে, তাদের পায়ের গোড়ালিতে ইলেকট্রনিক চিপ বসিয়ে গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে চায় গ্রিস৷

গ্রিস সরকার জানিয়েছে, নির্বাসনের তালিকায় থাকা অভিবাসীদের গোড়ালিতে মনিটর পরতে হবে৷

সোমবার দেশটির অভিবাসনমন্ত্রী থানোস প্লেভরিস বলেছেন, প্রত্যাখ্যাত কোনো আশ্রয়প্রার্থী যদি নির্বাসন আদেশ অমান্য করেন, তবে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে৷ এজন্য, অভিবাসন নীতি সংস্কারের আওতায় চলতি বছরের মধ্যেই এই ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হবে৷

গ্রিসের রাষ্ট্রীয় বেতার ইআরটি রেডিওকে প্লেভরিস বলেন, ‘‘ইলেকট্রনিক পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করবে আশ্রয়প্রার্থীদের বিকল্পগুলো সংকুচিত হয়ে গেছে৷’’

প্লেভরিস আরো বলেন, আশ্রয় দাবি প্রত্যাখ্যান এবং আপিল শেষ হওয়ার পরে অভিবাসীদের যখন ৩০ দিনের মধ্যে গ্রিস ছেড়ে যেতে বলা হবে, তখন শেষ ৩০ দিনের জন্য ইলেকট্রনিক পর্যবেক্ষণ কার্যকর করা হবে৷

তিনি আরো বলেন, যারা স্বেচ্ছায় এই শর্ত মেনে চলবেন তাদের জন্য সরকার দুই হাজার ইউরো প্রত্যাবাসন বোনাস দেওয়ার কথাও বিবেচনা করছে৷

অনিয়মিত অভিবাসন ঠেকাতে বেশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে দেশটির সরকার৷ সম্প্রতি অভিবাসনপ্রবাহ মোকাবিলায় উত্তর আফ্রিকার উপকূল থেকে সমুদ্রপথে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আশ্রয় অধিকার তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে৷

সাধারণত তুরস্কের উপকূল থেকে এজিয়ান সাগর পেরিয়ে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের লক্ষ্য থাকে গ্রিক দ্বীপ ক্রিট বা গাভদোসে পৌঁছানো৷ কিন্তু চলতি গ্রীষ্মে লিবিয়ার উপকূল থেকে ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ক্রিট দ্বীপে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা তীব্রভাবে বেড়ে যায়৷

এই দ্বীপগুলোর প্রধান অর্থনীতি পর্যটন৷ গ্রীষ্মকালে সেখানে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়তে থাকে৷ কিন্তু হঠাৎ করে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আগমন বেড়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন স্থানীয়রাও৷ তারা মনে করছেন, অভিবাসনপ্রত্যাশীরা সেখানে আসতে থাকলে পর্যটকেরা আগ্রহ হারাবেন, তাতে ক্ষতির মুখে পড়বে তাদের অর্থনীতি৷

এমন প্রেক্ষাপটে রক্ষণশীল প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোতাকিসের সরকার তিন মাসের জন্য আশ্রয় অধিকার স্থগিত করেছে৷

আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে আশ্রয় স্থগিতের ঘোষণায় গ্রিসের নিন্দা করেছে অভিবাসী ও মানবাধিকার বিষয়ক বিভিন্ন সংস্থা৷ জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর এই ঘটনায় ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে৷

সরকারের নেয়া নতুন পদক্ষেপ অনুসারে সমুদ্রপথে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আটক করা হবে এবং তাদের লিবিয়া বা টিউনিশিয়া ফেরত পাঠানো হবে৷ এছাড়াও সমুদ্রপথে আসা একজন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে সর্বোচ্চ দুই বছরের জন্য আটক রাখা হতে পারে৷ এরপরও যদি কোনো অভিবাসনপ্রত্যাশী গ্রিসে থাকার চেষ্টা করেন, তাহলে তাকে পাঁচ বছর পর্যন্ত আটকাদেশ দেয়া হতে পারে৷

অভিবাসনমন্ত্রী বলেছেন, ‘সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে’ এই পদক্ষেপগুলো আইনি রূপ পাবে৷

আফ্রিকা, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সংঘাত, নিপীড়ন এবং দারিদ্র্য থেকে পালিয়ে আসা মানুষেরা উত্তর আফ্রিকার উপকূল থেকে ভূমধ্যসাগরে পেরিয়ে ইউরোপে নতুন জীবন শুরু করতে চান৷ তাদের অনেকেই ইউরোপে ঢুকতে গ্রিক উপকূলে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন৷ এসব অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ঠেকাতে ভূমধ্যসাগরে দুটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েনের সিদ্ধান্তও নিয়েছে গ্রিস৷

সীমান্তে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পুশব্যাক করা হয় বলেও গ্রিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে অধিকার সংস্থাগুলো৷ তবে, এই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে দেশটির সরকার৷

সূত্রঃ এপি, এএফপি

এম.কে
১৬ আগস্ট ২০২৫

আরো পড়ুন

‘যুদ্ধ-আসক্ত’ যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলার সবচেয়ে বড় ধ্বংসকারীঃ চীন

নিউজ ডেস্ক

ইরানে পাল্টা হামলায় অংশ নেবে না আমেরিকা: হোয়াইট হাউস

সিরিয়ার নির্বাসিত শাসক বাশার আল-আসাদকে বিষপ্রয়োগে হত্যার চেষ্টা