মারধর ও হত্যার হুমকির অভিযোগে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের করা মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এছাড়া আদালতে হাজির না থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশও দিয়েছেন আদালত।
আজ রোববার (২৬ জানুয়ারি) ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত পরীমনির সময় আবেদন নামঞ্জুর করে এ পরোয়ানা জারি করেন।
একই মামলায় আদালত পরীমনির পোশাক ডিজাইনার জুনাইদ বোগদাদী জিমির বিরুদ্ধেও অভিযোগ গঠন এবং তার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
পরীমনির আইনজীবী নিলাঞ্জনা রিফাত বলেন, ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের দায়ের করা মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন নির্ধারিত ছিল আজ।
পরীমনির পক্ষ থেকে তিনি শুনানির জন্য সময় চেয়ে আবেদন করেন। কিন্তু আদালত তা নাকচ করে দিয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। একইসঙ্গে পরীমনি অনুপস্থিত থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন বলে জানান আইনজীবী।
এর আগে ২০২৩ সালের ১৮ এপ্রিল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মামলাটিতে পুলিশ ব্যুরো অভ ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্ত প্রতিবেদন আমলে নেন। সেই সময় আদালত পরীমনিকে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেছিলেন।
২০২২ সালের ১৮ জুলাই ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ পরীমনি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে হামলা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ঢাকার আদালতে মামলা করেন।
অভিযোগে বলা হয়, ২০২১ সালের ৮ জুন পরীমনি ও তার সঙ্গীরা সাভার বোট ক্লাবে ঢুকে ওয়াশরুম ব্যবহার করেন। পরে তারা ক্লাবের ভেতরে বসে মদ পান করেন। রাত ১টা ১৫ মিনিটে ক্লাব ছাড়ার সময় পরীমনি নাসিরকে ডেকে এক বোতল ব্লু লেবেল হুইস্কি বিনামূল্যে দেওয়ার জন্য চাপ দেন।
নাসির রাজি না হলে পরীমনি তাকে কটূক্তি করেন এবং একটি গ্লাস ছুড়ে মারেন। ওই গ্লাস নাসিরের মাথা ও বুকে আঘাত করে বলে মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
পরে পিবিআই তদন্ত শেষে ২০২৩ সালের এপ্রিলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়। ওই প্রতিবেদনে পরীমনি ও তার পোশাক ডিজাইনার জিমির বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়।
পুলিশ ও আদালত সূত্র জানায়, জিমির মাধ্যমে নাসিরের ওপর হামলার প্রমাণ পাওয়া গেছে, এবং পরীমনির ছোড়া গ্লাসে নাসির আহত হন—এমন তথ্যও তদন্তে উঠে এসেছে।
অন্যদিকে ২০২১ সালের ৮ জুন ঘটনার দিনই পরীমনি সাভার থানায় নাসির ও আরও পাঁচজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন।
তদন্ত শেষে ২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর পুলিশ নাসিরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
এরপর ২০২২ সালের ১৮ মে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ মামলাটিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করেন।
আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত জানান, এই মামলাটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।
এদিকে, পরীমনি ও তার দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে একটি মাদক মামলা ঢাকার স্পেশাল জজ কোর্ট-১০ এ চলমান রয়েছে।
এম.কে
২৬ জানুয়ারি ২০২৫