যুক্তরাজ্যে ক্ষমতায় এলে পাঁচ বছরের মধ্যে ৬ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে রিফর্ম ইউকে দল। দলের নেতা নাইজেল ফারাজ এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ছোট নৌকায় সমুদ্রপথে আগত কাউকেই আর আশ্রয়ের সুযোগ দেওয়া হবে না।
ফারাজ বলেন, “যদি আমরা সবাইকে আটক করে ফেরত পাঠাই, তবে কয়েক দিনের মধ্যেই নৌকা আসা বন্ধ হয়ে যাবে, কারণ আর কোনো প্রণোদনা থাকবে না।”
রিফর্ম ইউকের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করা সবাইকে আটক করে দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এর পাশাপাশি আফগানিস্তানের মতো দেশগুলোকে আর্থিক প্রণোদনা ও সহায়তা দিয়ে সহযোগিতা করতে উদ্বুদ্ধ করা হবে। কোনো দেশ সহযোগিতা না করলে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপেরও পরিকল্পনা রয়েছে।
দলটি জানিয়েছে, এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নতুন Illegal Migration (Mass Deportation) Bill পাস করা হবে, যা স্বরাষ্ট্রসচিবকে আইনি বাধ্যবাধকতার মাধ্যমে অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর ক্ষমতা দেবে। পাশাপাশি ইউরোপিয়ান কনভেনশন অন হিউম্যান রাইটস (ECHR) থেকে বের হয়ে এসে শুধুমাত্র ব্রিটিশ নাগরিকদের জন্য নতুন British Bill of Rights চালুর ঘোষণা দিয়েছে তারা।
রিফর্ম পার্টির হিসাব অনুযায়ী, এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রায় ১০ বিলিয়ন পাউন্ড খরচ হবে। তবে তাদের দাবি, হোটেল ভাড়া ও অন্যান্য খাতে ব্যয় কমে দীর্ঘমেয়াদে সরকারের অর্থ সাশ্রয় হবে।
তবে বিরোধী দলগুলো পরিকল্পনাটিকে ‘অবাস্তব ও অকার্যকর’ বলে সমালোচনা করেছে। লেবার পার্টির চেয়ার এলি রিভস বলেছেন, রিফর্ম কোনো বিস্তারিত রূপরেখা দিতে পারেনি। কনজারভেটিভরা অভিযোগ করেছে, রিফর্ম তাদের পুরনো পরিকল্পনার নকল করেছে। লিবারেল ডেমোক্র্যাটের ডেপুটি লিডার ডেইজি কুপার মন্তব্য করেছেন, “এই পরিকল্পনা ন্যূনতম বিশ্লেষণেই ভেঙে পড়ে।”
সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে যুক্তরাজ্যে সমুদ্রপথে ছোট নৌকায় করে আগত অভিবাসীর সংখ্যা রেকর্ড ছুঁয়েছে। সরকারি হিসাবে, এ বছর এখন পর্যন্ত ২৮ হাজারের বেশি মানুষ ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে এসেছে, যা গত বছরের তুলনায় ৪৬ শতাংশ বেশি। ২০২০ সাল থেকে প্রায় ১ লাখ ৮৯ হাজার অনিয়মিত অভিবাসী শনাক্ত হয়েছে, যাদের মধ্যে আফগান, সিরীয়, এরিত্রিয়ান, ইরানি ও সুদানি নাগরিকই সংখ্যাগরিষ্ঠ।
সূত্রঃ স্যোশাল মিডিয়া
এম.কে
২৭আগস্ট ২০২৫