ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে গত আগস্টের শুরুতে শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। নাটকীয় পটপরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের পর পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটছে।
অন্যদিকে নানা ঘটনাপ্রবাহে ভারতের সাথে উত্তেজনা বেড়েছে বাংলাদেশের। এমন অবস্থায় পাকিস্তানের কাছ থেকে ৪০০ কিলোমিটার পাল্লার আবদালি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের দিকে নজর দিয়েছে বাংলাদেশ।
একটি রিপোর্টের বরাত দিয়ে এমনই দাবি করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম মানি কন্ট্রোল।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যমটি দাবি করেছে, স্বল্প-পাল্লার আবদালি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের জন্য বাংলাদেশ পাকিস্তানকে অনুরোধ করেছে বলে জানা গেছে।
পাকিস্তানে হাতফ-২ নামে পরিচিত এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর পাল্লা ৪০০ কিলোমিটার। আর এটি ভারতের জন্য একটি বড় নিরাপত্তা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে বলেও প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ‘ইন্ডিয়ান ডিফেন্স রিসার্চ উইং (আইডিআরডব্লিউ)’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ হিসেবে ব্যবহার করতে চায়। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর স্বল্প পরিসর ভারতের সমগ্র উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে বাংলাদেশের নাগালের মধ্যে এনে দেবে।
পাকিস্তানের মহাকাশ গবেষণা কমিশনের তৈরি এই কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা বর্তমানে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ব্যবহার করছে।
আইডিআরডব্লিউ তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করেছে, পাকিস্তানের কাছ থেকে কৌশলগত এই ক্ষেপণাস্ত্র বাংলাদেশের হাতে আসলে এটি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে শক্তির গতিশীলতা পরিবর্তন করবে, যা সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর প্রভাব ফেলবে।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, আবদালি ক্ষেপণাস্ত্রের পরিসর সীমিত হলেও বাংলাদেশ এগুলো মোতায়েন করলে তা এই অঞ্চলে ভারতের সামরিক অবস্থানের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধক এবং পাল্টা জবাব দেওয়ার মতো উপাদান হিসাবে কাজ করবে।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হাতফ-২ বা আবদালি’র ওজন ১ হাজার ৭৫০ কেজি। এই ক্ষেপণাস্ত্রে একটি একক পর্যায়ের কঠিন প্রপেলান্ট ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
উল্লেখ্য, গত বছরের সেপ্টেম্বরে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলেছিল— পাকিস্তানের কাছে বর্তমানে পারমাণবিক ক্ষমতা সম্পন্ন ৬টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে— আবদালি (হাতফ-২), গজনভি (হাতফ-৩), শাহিন-১/এ (হাতফ-৪) এবং স্বল্প-পাল্লার স্ট্রাইক সক্ষমতাসহ নাসর (হাতফ-৯), মাঝারি-পাল্লার ঘৌরি (হাতফ-৫) এবং শাহিন-২ (হাতফ-৬)।
এর পাশাপাশি পাকিস্তান দুটি পৃথক পারমাণবিক সক্ষমকতা সম্পন্ন ব্যালিস্টিক সিস্টেমে কাজ করছে। আর তা হচ্ছে— মাঝারি-পাল্লার স্ট্রাইক সক্ষমতা সম্পন্ন শাহিন-৩ এবং মাল্টিপল ইন্ডিপেন্ডেন্টলি টার্গেটেবল রিএন্ট্রি ভেহিকল আবাবিল।
সূত্রঃ মানি কন্ট্রোল
এম.কে
৩০ ডিসেম্বর ২০২৪