ফুটবল বিশ্বকাপ আসরের একটি বড় আকর্ষণ এর জন্য তৈরি বলটি। প্রতি বিশ্বকাপে নতুন রূপ ও বৈশিষ্ট নিয়ে আসে এই বল। কাতার বিশ্বকাপে যে বলটি দিয়ে খেলা হচ্ছে তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘আল রিহলা’। এটি আরবি ভাষার শব্দ। যার অর্থ ভ্রমণ, যাত্রা।
ফিফার দাবি, বর্তমানের গতিময় ফুটবলের সঙ্গে তাল মেলালোর বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই তৈরি করা হয়েছে বলটি। এর গতি আগের সব আসরের চাইতে বেশি। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এর আগে যত বল তৈরি হয়েছে তার চেয়ে এটি বাতাসে বেশি গতিতে ছোটে।
যথারীতি এর প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাডিডাস। আর বলটি তৈরি হয়েছে পাকিস্তানে। বলগুলো তৈরি হয়েছে দেশটির পাঞ্জাব প্রদেশের গুরুত্বপূর্ণ শহর শিয়ালকোটের একটি কারখানায়। সেখানে ফরওয়ার্ড স্পোর্টস নামের প্রতিষ্ঠানের কারখানায় তৈরি হয়েছে বল। প্রতি মাসে এই কোম্পানি ৭ লাখ ফুটবল বানায়।
জানা গেছে, রাশিয়া বিশ্বকাপের ‘টেলস্টার ১৮’ বলও তৈরির স্বত্বও পেয়েছিল পাকিস্তানের এই প্রতিষ্ঠান।
ফরওয়ার্ড স্পোর্টসের ক্রীড়া ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসান মাসুদ জানিয়েছিলেন, এবারের বিশ্বকাপের বলটি খুবই বেশি প্রতিক্রিয়াশীল এবং দ্রুতগামী। এই বলে ব্যবহৃত ২৫ শতাংশ উপাদান টেকসই এবং রি-সাইকেল করা উপাদান দিয়ে তৈরি। কাতারে বিশ্বকাপে ৩০০০ ফুটবল ব্যবহার করা হবে, যার মূল্য ৮ মিলিয়ন ডলার। বলটির ওজন ৪২৫-৪৪৫ গ্রাম, এটি আকারে ৬৮.৮ সেমি থেকে ৬৯.৩ সেমি পর্যন্ত।
তিনি বলেন, ঐতিহ্যগতভাবে বিশ্বকাপের ফুটবল হাতে সেলাই করা হতো। তবে ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে থার্মোস বাইন্ডিংয়ের বল ব্যবহার করা হয়। এরপর রাশিয়া বিশ্বকাপেও একই ধরনের বল ব্যবহার করা হয়। এবারের বিশ্বকাপ বলগুলোও একইভাবে তৈরি।
‘আল রিহলা’র ব্যবহার করা হয়েছে সর্বোচ্চ প্রযুক্তি। বলটিতে থাকছে ‘সিআরটি কোর’ এবং স্পিডশেল। যা ভিএআরকে আরও আধুনিক করে তুলবে। এতে নির্ভুল ও দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা পাবেন রেফারিরা।
পাকিস্তানে তৈরি হলেও বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশ কাতারের সংস্কৃতি, স্থাপত্য, প্রতীকী নৌকা ও তাদের পতাকার রংয়ের মিশেলে তৈরি করা হয়েছে ‘আল রিহলা’ নামের বলটি।
যেখানে ২০টি প্যানেলের ডিজাইন ব্যবহার করেছে অ্যাডিডাস। এগুলো সব ত্রিভুজাকৃতির, যা মধ্যপ্রাচ্যের ‘ধো’ নৌকার প্রতীক। প্যানেলের দুই দিক বিভিন্ন রংয়ে আবৃত। যা কাতারের পতাকা ও আরবের ঐতিহ্যবাহী সাদা পোশাককে ফুটিয়ে তুলেছে।
২৩ নভেম্বর ২০২২
নিউজ ডেস্ক