গোয়াইনঘাট উপজেলার ৭০ ভাগের বেশি এলাকা প্লাবিত হয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের বাসিন্দারাই এখন বিপর্যস্ত। উপজেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, গোয়াইনঘাটের ৭০ ভাগের বেশি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। রাস্তাঘাটে পানি উঠে উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিভিন্ন এলাকার। অনেকের ঘরের ভেতরে কোমরপানি। মালামালও নষ্ট হচ্ছে। ঘরের উনুন তলিয়ে যাওয়ায় রান্নাবান্নাও করতে পারছে না মানুষ।
গতকাল বুধবার সকাল থেকেই গোয়াইনঘাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি বাড়তে থাকে। রাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত নদ-নদীতে পানি বাড়ছে। তবে কিছু কিছু এলাকায় বানের পানি কমার খবর পাওয়া গেছে।
উপদ্রুত মানুষ বলছে, এবারের পরিস্থিতি ২০২২ সালের বন্যাকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে অনেক মানুষ। এদিকে, এ অবস্থায় বন্যার পানিতে আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধারে গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসনের নানা টিম কাজ করছে।
পাহাড়ি ঢলের পানি সারী-পিয়াইন ও ডাউকি নদ-নদী দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় দ্রুতগতিতে বাড়ছে। এতে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন পূর্ব জাফলং, মধ্য জাফলং, পশ্চিম জাফলং, পূর্ব ও পশ্চিম আলীরগাঁও, রুস্তমপুর, বিছনাকান্দি, লেঙ্গুড়া, ডৌবাড়ী, ফতেহপুর, তোয়াকুল, নন্দীরগাঁও এবং সদর ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। উপজেলা সদরের সঙ্গে সব কটি ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মোট ১ হাজার ৬৬০ হেক্টর আবাদি জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। ৩৪৩ বর্গকিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বন্যাদুর্গত মোট পরিবার ৪২ হাজার ৯০০, মোট বন্যাদুর্গত মানুষের সংখ্যা ২ লাখ ৪৫ হাজার ৯৫০।
উপদ্রুত কয়েকটি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পরিস্থিতি খুব ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। বাড়িঘরে পানি উঠে আতঙ্কের মধ্যে আছেন তারা।
গোয়াইনঘাটের ইউএনও বলেন, উপজেলার ৭০ ভাগের বেশি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি মেম্বারদের সমন্বয়ে স্থানীয় ভলান্টিয়ারদের মাধ্যমে উদ্ধার কার্যক্রম চালাচ্ছে। পানিবন্দী মানুষকে উদ্ধারে জাফলং পর্যটক ঘাটের দেড় শতাধিক নৌকা এবং প্রতিটি ইউনিয়নের স্থানীয় নৌকা ব্যবহার করা হচ্ছে। সবাইকে সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বনের অনুরোধ করছি। ইতিমধ্যে অনেক বানভাসি মানুষকে উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে, কার্যক্রম চলমান থাকবে।
এম.কে
৩০ মে ২০২৪