যুক্তরাজ্যের ড্যাগেনহাম, হর্নচার্চ এবং ওয়ালথামস্টোর বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ভয়াবহ ঘাসের দাবানলে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। আগুনের শিখা এতটাই তীব্র ছিল যে ঘরবাড়ি ফেলে বাসিন্দাদের রাতেই সরিয়ে নেওয়া হয়।
ড্যাগেনহামে রাতভর ১২০ জনের বেশি দমকলকর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছেন। আগুনের উৎস ছিল ক্লেমেন্স রোডের পিছনের বিম পার্কল্যান্ডস এলাকায়। মাত্র কয়েক মিনিটেই ২০ একরের ঘাসজমি দাউদাউ করে জ্বলে উঠে আগুন ঘরবাড়ির একেবারে কাছে পৌঁছে যায়।
এক ভিডিওতে দেখা যায়, এক মা তার সন্তানকে কোলে নিয়ে ধোঁয়ার ভেতর দৌঁড়ে পালাচ্ছেন। কমিউনিটি অফিসাররা ঘরে ঘরে গিয়ে দরজা চাপড়াচ্ছেন, সবাইকে দ্রুত সরে যেতে বলছেন। কেউ কেউ বাগানের পাইপ দিয়ে আগুন ঠেকাতে চেষ্টা করছেন।
২৮ বছর বয়সী সারাহ টমকিনস বলেন, “দমকলকর্মীরা বলেছিল এলাকা ছেড়ে যেতে। আমরা শুধু কয়েকটা জিনিস ব্যাগে ভরে পালিয়ে যাই। আজ ফিরে এসে ভাবছিলাম আমাদের বাড়ি টিকে আছে কি না। ভাগ্য ভালো, সবাই নিরাপদে আছে।”
ফেভেন ঘেবরা, ৪৭, বলেন, “ভয়াবহ আগুন দেখে আমরা পুরো পরিবার নিয়ে পার্কের উল্টো পাশে পালিয়ে যাই। কয়েক মিনিটেই আগুন আশপাশ ঘিরে ফেলে।”
ফায়ার সার্ভিস জানায়, আগুন যাতে বাড়ির ভেতরে না ঢোকে, সেজন্য বিশেষ ধরনের যন্ত্র ব্যবহার করা হয়—যেমন মিস্টিং ল্যান্স, ওয়াইল্ডফায়ার বিটার এবং ৪৭৫ লিটার পানি বহনকারী দ্রুতগতির যান। কিছু জায়গায় বাগানের বেড়া, শেড ও ফার্নিচার পুড়ে যায়।
একই রাতে হর্নচার্চের উইঙ্গলটেই লেন এলাকায় ছয় হেক্টরের ঘাসজমি পুড়ে যায়। সেখানে আটটি ইঞ্জিন ও ৬০ জনের বেশি ফায়ারফাইটার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। বার্কিং, কেনটিশ টাউন, সোহোসহ আশপাশের স্টেশন থেকেও দমকল বাহিনী পাঠানো হয়।
ড্যাগেনহাম, হর্নচার্চ ও ওয়ালথামস্টো—এই তিন দাবানল নিয়ে পৃথক তদন্ত শুরু হয়েছে।
ইতিমধ্যে এসেক্স ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, মালডনে যে দাবানল হয়েছিল, তা ইচ্ছাকৃতভাবে লাগানো হয়েছিল। আগুনে চেলমার ব্ল্যাকওয়াটার রিজার্ভের কাছে এক হেক্টরের বেশি এলাকা পুড়ে যায়।
ফায়ার সার্ভিসের মুখপাত্র জানান, “অনেক দাবানল অসতর্কতা বা উদ্দেশ্যমূলকভাবে ঘটে থাকে। কাউকে সন্দেহজনক আচরণ করতে দেখলে দেরি না করে ১০১ নম্বরে পুলিশে খবর দিন।”
সূত্রঃ দ্য মেট্রো
এম.কে
১৬ জুলাই ২০২৫