20 C
London
September 16, 2024
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

প্রচণ্ড গরমের মধ্যে সিলেটে দিনে এক তৃতীয়াংশ লোডশেডিং

গরম আবহাওয়া ও লোডশেডিংয়ের কারণে সিলেটের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তীব্র গরম এবং একই সাথে লোডশেডিং মিলিয়ে নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের। গত ক’দিন ধরে সিলেটে তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে। গতকাল বিকাল ৩টায় তাপমাত্রা ছিল ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ কারণে প্রচণ্ড গরমে সিলেটের মানুষের হাপিত্যেশ বাড়ছে। এই অবস্থায় সিলেটে সমানতালে হচ্ছে লোডশেডিং। দিনে ও রাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ও বিদ্যুৎ থাকছে না। বিদ্যুৎ বিভাগ অসহায়। তাদের দাবি হচ্ছে- গরমে চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে সহসাই লোডশেডিং কমার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন তারা। কারণ সরকারের সিদ্ধান্তে শিল্পাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। এ কারণে বাণিজ্যিক ও আবাসিক পর্যায়ে লোডশেডিংয়ের চাপ বেড়েছে।

তার উপর সিলেটের বিবিয়ানার একটি কেন্দ্রসহ চট্টগ্রামের কয়েকটি কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এসব কেন্দ্র চালু না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যুতের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা। সিলেট বিদ্যুৎ অফিসের গতকাল শনিবারের পরিসংখ্যান ঘেটে জানা গেছে- সিলেটে দিনের এক তৃতীয়াংশ সময় লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। বিদ্যুত চাহিদার তুলনায় কম সরবরাহ করার কারণে এমনটি করতে হচ্ছে। শনিবার ছুটির দিনে সিলেট বিভাগে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ২০৭ মেগাওয়াট। তার বিপরীতে জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় ১৪৪ মেগাওয়াট। ফলে ৬৩ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি থাকায় বিভাগে প্রায় ৩১ ভাগ লোডশেডিং করতে হয়েছে। সিলেট জেলার অবস্থাও একই। জেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৪৬ মেগাওয়াট। অথচ জাতীয় গ্রিড থেকে সরবরাহ করা হয় ১০১ মেগাওয়াট। ৪৫ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি থাকায় লোডশেডিং করতে হয়েছে ৩১ ভাগ।

ছুটির দিন শনিবার ছাড়াও শুক্রবারের পরিসংখ্যানও প্রায় একই ছিল। আজ থেকে সমপরিমাণ লোডশেডিংয়ে বিদ্যুৎ পেলে সিলেটে দুর্ভোগ বাড়বে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী জানিয়েছেন, চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে বিদ্যুতের লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। এখানে কর্মকর্তাদের কিছু করার নেই। যদি চাহিদামতো বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় তাহলে লোডশেডিং কমে আসবে।

তিনি বলেন, সিলেট বিভাগের বিবিয়ানার একটিসহ চট্টগ্রাম বিভাগের কয়েকটি কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। উৎপাদন কমে যাওয়ার চাপ এসে জাতীয় গ্রিডে পড়ছে। যদি উৎপাদন বাড়ে তাহলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে জানান তিনি। এদিকে- সিলেটে গত দু’দিন ধরেই কেবল লোডশেডিং হচ্ছে তা নয়, গত ১০-১২দিন ধরে একই অবস্থা বিরাজমান। দিনে ও রাতে সমানতালে লোডশেডিং করা হচ্ছে। এতে করে আবাসিক এলাকায় পানি সংকট দেখা দিচ্ছে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না থাকার কারণে একটানা পাম্প চালানো সম্ভব হয় না। এ কারণে বিভিন্ন এলাকায় পানি সংকট দেখা দিয়েছে। এরপরও সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে পানি সরবরাহ স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

এদিকে একই অবস্থা সিলেটের ব্যবসায়ীদের। দিনের বেলা দুপুর ১২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত নগরের বাণিজ্যিক এলাকা জিন্দাবাজার, বন্দরবাজারসহ কয়েকটি এলাকায় লোডশেডিং বেশি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা লোকসানে পড়েছেন। জেনারেটর জ্বালিয়ে তাদের ব্যবসা স্বাভাবিক রাখতে হচ্ছে। এতে লাভের চেয়ে জেনারেটরের তেল খরচে ব্যবসায়ীরা লোকসানে পড়ছেন বেশি।

বড় বড় মার্কেটগুলো জেনারেটরের মাধ্যমে ব্যবসা সচল রাখতে পারলেও বেশির ভাগ মার্কেটে জেনারেটর না থাকায় ব্যবসায়ীরা দিনের বেলা অন্ধকারে থাকেন। কেউ কেউ জেনারেটর জ্বালিয়ে ব্যবসা করলেও লাভের চেয়ে লোকসান বেশি হয়। এই অবস্থা থেকে উত্তরনের জন্য তারা বিষয়টি নিয়ে সিলেটের প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান।

এম.কে
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আরো পড়ুন

বদলে যাচ্ছে দেশের সব টেলিফোন নাম্বার

অনলাইন ডেস্ক

ভারতে ‘বৈধভাবে’ থাকার সময় ফুরিয়ে আসছে শেখ হাসিনার

ত্রাণের টাকা কোথায়, জানালেন হাসনাত আব্দুল্লাহ