মানব পাচারকারীরা এখন নতুন কৌশলে ফরাসি পুলিশের নজর এড়িয়ে ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে অভিবাসী পাঠাচ্ছে ব্রিটেনে। গতকাল গ্রাভেলিনসের কাছে কালে শহরের সমুদ্রতীরে, নারী ও শিশুদের মানবঢাল হিসেবে সামনে রেখে দলে দলে অভিবাসীরা জড়ো হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে নারী-শিশুদের সামনে রেখে তারা উত্তেজনা এড়াতে সক্ষম হয়, কারণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শিশুদের ক্ষতির আশঙ্কায় বলপ্রয়োগ থেকে বিরত ছিল।
ফরাসি পুলিশের প্রাথমিক কৌশল ছিল দলটিকে ঘিরে রেখে (kettling) বালির টিলার দিকে সরিয়ে নেওয়া। কিন্তু এ পরিস্থিতিকে সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করে একটি পুরুষ অভিবাসী দল আচমকা দৌঁড়ে আবার সৈকতের দিকে ফিরে আসে এবং দ্রুত একটি ডিঙ্গি নৌকায় উঠে পড়ে। নৌকাটি ফরাসি উপকূল ছেড়ে ব্রিটেনের দিকে যাত্রা শুরু করে, আর এর অধিকাংশ যাত্রীই ছিল পুরুষ।
এ ঘটনা এমন সময়ে ঘটেছে, যখন ব্রিটিশ লেবার পার্টির মন্ত্রী ড্যারেন জোনসকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে — তিনি BBC-র এক অনুষ্ঠানে দাবি করেন, ছোট নৌকায় ব্রিটেনে আগত অভিবাসীদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। বাস্তব চিত্র সেই দাবিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
ফরাসি পুলিশের টিয়ার গ্যাস ও বাধার মুখেও পাচারকারীরা সফলভাবে একটি দল পাঠাতে সক্ষম হয়েছে। শুক্রবার একদিনেই ১৪টি নৌকায় চ্যানেল পেরিয়ে ব্রিটেনে পৌঁছেছে ৯১৯ জন অভিবাসী — যা চলতি বছরে অভিবাসীর মোট সংখ্যা দাঁড় করিয়েছে ১৬,১৮৩-তে। এ সংখ্যা ২০২৪ সালের এই সময়ের তুলনায় ৪২% এবং ২০২৩ সালের তুলনায় ৭৯% বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাচারকারীদের এই নতুন কৌশল মানবিকতা ও নিরাপত্তা — উভয় ক্ষেত্রেই বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। নারী ও শিশুদের সামনে রেখে পুলিশকে সংকটে ফেলে পুরুষ অভিবাসীদের পাড়ি দেওয়ার পথ খুলে দেওয়া শুধু মানব পাচারের জঘন্য রূপই নয়, এটি ব্রিটিশ সীমান্ত নীতিরও একটি বড় ব্যর্থতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে
১৫ জুন ২০২৫