ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনায় অটল থাকলে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে দীর্ঘদিনের নিরাপত্তা সহযোগিতা বন্ধ করে দিতে পারে বলে সতর্ক করেছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের ঘোষণার পর এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বহু বছর ধরে যুক্তরাজ্যের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সন্ত্রাসবিরোধী তথ্য বিনিময় করে আসছে, যা অসংখ্য হামলা ঠেকাতে সহায়ক হয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, স্যার কিয়ারের ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলি সরকার এই গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতা প্রত্যাহারের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে। নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, ফ্রান্স ও কানাডার মতো দেশগুলোও যারা সম্প্রতি ফিলিস্তিন স্বীকৃতির ইচ্ছা প্রকাশ করেছে, তাদের উচিত সম্ভাব্য পরিণতি ভেবে দেখা। এক ইসরায়েলি কূটনীতিক বলেন, “লন্ডনকে সাবধান হতে হবে, কারণ নেতানিয়াহু ও তার মন্ত্রীরা এখনো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তাস হাতে রেখেছেন।”
ব্রিটেনের এমআইসিক্স-এর সমপর্যায়ের ইসরায়েলের মোসাদ গোয়েন্দা সংস্থা ইতিপূর্বে লন্ডনে ইরান-সংযুক্ত একটি সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা ভেস্তে দেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করেছে। এটি যুক্তরাজ্যে সাম্প্রতিক বছরগুলোর অন্যতম বড় সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান হিসেবে বিবেচিত। নিরাপত্তা সহযোগিতা বন্ধ হয়ে গেলে ব্রিটেন সন্ত্রাস মোকাবিলায় একটি বড় সহায়তা হারাবে।
নেতানিয়াহু প্রকাশ্যে স্যার কিয়ারের প্রস্তাবের কড়া সমালোচনা করে বলেন, এই পদক্ষেপ “হামাসের ভয়ংকর সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করছে এবং শিকারদের শাস্তি দিচ্ছে।” তিনি সতর্ক করে বলেন, “আজ ইসরায়েলের সীমান্তে একটি জিহাদপন্থী রাষ্ট্র কাল ব্রিটেনকে হুমকি দেবে।”
অন্যদিকে, স্যার কিয়ার স্টারমার যুক্তি দিয়েছেন যে গাজার পরিস্থিতি “সহ্যের সীমা ছাড়িয়েছে” এবং ইসরায়েলকে অবিলম্বে খাদ্য ও প্রয়োজনীয় সহায়তার প্রবেশে সব অবরোধ তুলে নিতে আহ্বান জানিয়েছেন। তার এই ঘোষণাকে হামাস স্বাগত জানিয়েছে। সংগঠনটির এক জ্যেষ্ঠ নেতা একে “বিজয়ের কাছাকাছি” যাওয়ার প্রমাণ বলে মন্তব্য করেছেন।
গাজা দখল ও মানবিক সহায়তা পরিকল্পনা নিয়ে ইসরায়েলের যুদ্ধ মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় স্যার কিয়ার বলেছেন, এই পদক্ষেপ সংঘাতের অবসান বা জিম্মি মুক্তিতে সহায়ক হবে না, বরং আরও রক্তপাত ঘটাবে। তিনি যুদ্ধবিরতি, মানবিক সহায়তার প্রবাহ বৃদ্ধি, জিম্মি মুক্তি এবং আলোচনার মাধ্যমে স্থায়ী সমাধানের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
সূত্রঃ দ্য এক্সপ্রেস
এম.কে
০৮ আগস্ট ২০২৫