মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করতে সৌদি আরব তার অবস্থানে কঠোরভাবে অনড় রয়েছে। ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার যে কোনো চুক্তির পূর্বশর্ত হিসেবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন সম্প্রতি নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সৌদি আরবভিত্তিক গণমাধ্যম আল আরাবিয়াহ জানিয়েছে, ব্লিঙ্কেন সৌদি আরবের এ কঠোর অবস্থানের কথা তুলে ধরেছেন।
তিনি বলেন, প্রথমে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় যুদ্ধবিরতি আনতে হবে। এর পরে এ অঞ্চলের দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতায় প্রাধান্য দেওয়া জরুরি, যেখানে ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকবে।
তবে, সৌদি আরব পরিষ্কার করে দিয়েছে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ছাড়া ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন সম্ভব নয়। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের এই শর্ত মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক ও কূটনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
এর আগে ২০১৭ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে আব্রাহাম অ্যাকর্ডস চুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মরক্কো ও সুদানের সঙ্গে ইসরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। তবে সৌদি আরব শুরু থেকেই এই প্রক্রিয়ায় ফিলিস্তিন ইস্যুকে সামনে এনেছে।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত প্রিন্সেস রিমা বিনতে বন্দর আল সৌদ সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে বলেছেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের অপ্রতিরোধ্য পথ ছাড়া ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদির সম্পর্ক স্বাভাবিক করা অসম্ভব।
এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যে মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভেন উইটফকে সৌদি আরবে পাঠিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, দ্বিতীয় দফায়ও ইসরায়েল-সৌদি সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চুক্তি হতে পারে। তবে সৌদি আরবের দৃঢ় অবস্থান এবং ফিলিস্তিন ইস্যুতে তাদের শর্ত এই প্রক্রিয়াকে জটিল করে তুলতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান পরিস্থিতির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এ অঞ্চলের কূটনৈতিক এবং সামরিক স্থিতিশীলতার ওপর। ফিলিস্তিন ইস্যুতে সৌদি আরবের এই দৃঢ়তা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে।
সূত্রঃ আল আরাবিয়াহ
এম.কে
২০ ডিসেম্বর ২০২৪