ছোট নৌকায় শরণার্থী পারাপার রোধে ফরাসি ব্যর্থতায় গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন যুক্তরাজ্যের সীমান্ত নিরাপত্তা প্রধান মার্টিন হিউইট। হাউস অব কমন্সের স্বরাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তিনি বলেন, ফ্রান্সে সরকারের ঘন ঘন পরিবর্তন ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এ সমস্যার বড় কারণ। হিউইট জানান, সীমান্ত নিরাপত্তায় ফ্রান্সের হস্তক্ষেপমূলক কৌশল বাস্তবায়ন না হওয়ায় ইংলিশ চ্যানেলে নৌকা পারাপার নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা ব্যাহত হচ্ছে।
চলতি বছরের জুনে ফরাসি মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, পুলিশ যেন প্রথমবারের মতো উপকূল থেকে ৩০০ মিটার দূরত্বের মধ্যে ছোট নৌকা আটক করতে পারে। তখন একে “গেমচেঞ্জার” পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হয়েছিল। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। ফরাসি পুলিশ বলছে, যথাযথ প্রশিক্ষণ, সরঞ্জাম ও নিরাপত্তা নিশ্চয়তা না পেলে তারা এই ঝুঁকিপূর্ণ অভিযানে অংশ নেবে না। হিউইট জানান, তিনি সম্প্রতি প্যারিসে ফরাসি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং এই পরিকল্পনার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন, তবে অগ্রগতি “অত্যন্ত হতাশাজনকভাবে ধীর”।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর তথ্যমতে, ২০২৪ সাল ছিল চ্যানেলপথে মৃত্যুর দিক থেকে সবচেয়ে ভয়াবহ বছর। অন্তত ৮২ জনের মৃত্যু ঘটে, যাদের মধ্যে ১৪ জন শিশু। চলতি বছরও ২০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। হিউইট জানান, শীতকালে ইরিত্রিয়া, ইথিওপিয়া, সুদান ও সোমালিয়া থেকে আগত অভিবাসীদের সংখ্যা বেড়েছে। পাচারকারীরা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলায় অনেকে টাকা না দিয়েও নৌকায় উঠছিল। এই বিশৃঙ্খল অবস্থায় দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যায়।
সীমান্ত কমিটির বৈঠকে জানা যায়, যুক্তরাজ্যের নতুন “ওয়ান ইন, ওয়ান আউট” চুক্তি বাস্তবায়নে কাজ করছেন মাত্র ১২ জন কর্মকর্তা, যেখানে আগের সরকারের রুয়ান্ডা চুক্তিতে ছিল ১,০০০-এর বেশি কর্মী। হিউইট বলেন, এই উদ্যোগে আরও অনেকে যুক্ত আছেন, তবে পাচারচক্র ধ্বংস করতে সময় লাগবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, “এটি একটি প্রতিষ্ঠিত অপরাধচক্র— অত্যন্ত লাভজনক এবং সুসংগঠিত। এক বা দুটি পদক্ষেপে এটি থামানো সম্ভব নয়।”
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
১৬ অক্টোবর ২০২৫