ফান্সের পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে গতকাল রোববার। এতে জয়লাভ করতে চলেছে মেরি ল পেনের কট্টর ডানপন্থী ন্যাশনাল র্যালি (আরএন)। নির্বাচনে প্রায় ৩৪ শতাংশ ভোট পেয়ে জয় পেতে যাচ্ছে আরএন। তবে চূড়ান্ত ফলাফলের জন্য আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় দ্বিতীয় দফার ৭ জুলাই নির্বাচনের অপেক্ষা করতে হবে।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইপসোসসহ চারটি সংস্থার বুথফেরত জরিপে এমন চিত্র উঠে এসেছে। এটি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর জন্য বড় একটি ধাক্কা। জনমত জরিপে আগে থেকেই আরএনের জয়ের ব্যাপারে আভাস দেওয়া হয়েছিল। ২৯ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থান পেতে যাচ্ছে বামপন্থী দলগুলোর জোট নিউ পপুলার ফ্রন্ট। আর প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর এনসেম্বল জোট ২১ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় হতে যাচ্ছে।
এদিকে দল জয়ের পথে থাকায় উল্লাস প্রকাশ করছেন ল পেনের সমর্থকেরা। তবে আগামী রোববারের দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের আগে অভিবাসনবিরোধী ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) সমালোচনাকারী নেতা মেরি ল পেনের দল সরকার গঠন করতে পারবে কি না, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারছেন না তারা।
দীর্ঘ সময় জনবিচ্ছিন্ন থাকলেও এখন ক্ষমতার খুব কাছাকাছি রয়েছে আরএন। ল পেনের বর্ণবাদ ও ইহুদিবিরোধী অবস্থান যতটা জনগণকে কাছে টেনেছে, ততটাই দূরে ঠেলেছে মাখোঁর সময়ে জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয় এবং তার অভিবাসন বিষয়ে অবস্থান।
ন্যাশনাল র্যালির (আরএন) সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী ২৮ বছর বয়সী নেতা জর্ডান বারদেলা বলেন, ‘ভোটাররা যদি আমাদের ভোট দেন, তাহলে আমি নেতা হতে প্রস্তুত।’
ফান্সের পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রথম ধাপের ৫০ শতাংশ ভোট না পেলে সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া দুই দল সরাসরি দ্বিতীয় ধাপে প্রতিযোগিতা করবে। পাশাপাশি যারা ১২ দশমিক ৫ শতাংশ নিবন্ধিত ভোটারের সমর্থন পাবেন, তারাও দ্বিতীয় ধাপে অংশ নিতে পারবেন। দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে যারা সর্বোচ্চ ভোট পাবেন, তারাই জয়ী হবেন।
এদিকে আরএনকে ঠেকাতে গণতান্ত্রিক জোট গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন মাখোঁ। এক বিবৃতিতে তিনি ভোটারদের রিপাবলিকান ও গণতান্ত্রিক প্রার্থীদের সঙ্গে থাকার আহ্বান জানান।
আগামী সপ্তাহে আরএনের ক্ষমতায় যাওয়া কিছুটা নির্ভর করছে সামনের দিনগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর সমঝোতার ওপর। অতীতে আরএনকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখতে অন্যান্য দল একত্রিত হয়ে জোট গঠনের নজির থাকলেও এবার সেই সম্ভাবনা কম বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গতকাল নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৬০ শতাংশ ভোট পড়ে। দুই বছর আগে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৩৯ দশমিক ৪২ শতাংশ।
ইপসোস ফ্রান্সের গবেষণা পরিচালক ম্যাথিউ গ্যালার্ড বলেন, ভোট পড়ার এই হার ১৯৮৬ সালের পর সর্বোচ্চ।
সূত্রঃ রয়টার্স
এম.কে
০২ জুলাই ২০২৪