যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি ও তার স্ত্রী নিকোলা গ্রিনের বিরুদ্ধে ফ্রান্সের একজন ট্যাক্সিচালক বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন। অভিযোগ, একটি স্কি রিসোর্টে পৌঁছানোর পর £৬০০ পাউন্ড অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে তীব্র বাকবিতণ্ডা হয়, যেখানে ল্যামি ‘গুন্ডার মতো আচরণ’ করেন বলে দাবি চালকের।
ফরাসি চালক নাসিম মিমুন জানান, গত ১০ এপ্রিল তিনি ল্যামি ও তার স্ত্রীকে ইতালির ফরলি থেকে ফ্রান্সের আল্পস অঞ্চলে নিয়ে যান। এই দীর্ঘ যাত্রার জন্য বুকিং ছিল মোট €১,৫৫০ ইউরো, যার মধ্যে €৭০০ ইউরো অতিরিক্ত দাবির বিষয়ে যাত্রীদের সঙ্গে মতবিরোধ হয়। মিমুন বলেন, “ল্যামি রসিদ ছিনিয়ে নেন, অত্যন্ত আগ্রাসী হয়ে ওঠেন এবং আমাকে ভীত করে তোলেন।”
তিনি আরও বলেন, তাকে জানানো হয়নি যে তিনি একজন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীকে পরিবহন করছেন, যা একটি গুরুতর নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করেছিল। “এই ধরনের ভিআইপি যাত্রীদের নিরাপত্তা, লাগেজ ও গোপন নথিপত্র থাকে, যা আমি আগে জানলে ব্যবস্থা নিতে পারতাম,” বলেন মিমুন।
ঘটনার সময় গাড়িতে কোনো নিরাপত্তা বাহিনী ছিল না বলেও দাবি চালকের। তিনি বলেন, যাত্রীদের আচরণে আতঙ্কিত হয়ে তিনি গাড়ি চালিয়ে চলে যান, পরে পুলিশ স্টেশনে গিয়ে বুঝতে পারেন তাদের লাগেজ গাড়িতে রয়ে গেছে। তিনি সেই লাগেজ হতে একটি কোডযুক্ত ব্রিফকেস ও দুটি কূটনৈতিক পাসপোর্ট—পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।

ল্যামি ও তার স্ত্রী এই ঘটনায় সম্পূর্ণ দায় অস্বীকার করেছেন এবং দাবি করেছেন, সম্পূর্ণ ভাড়া পরিশোধ করা হয়েছে। উল্টো তারা চালকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, লাগেজ নিয়ে চলে যাওয়ার কারণে। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, “পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও তার স্ত্রী এই মামলায় ভুক্তভোগী হিসেবে চিহ্নিত। চালকের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ আনা হয়েছে।”
এদিকে, ফরাসি প্রসিকিউটর জানিয়েছেন, মিমুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘লাগেজ ও অর্থ আত্মসাৎ’-এর অভিযোগ আনা হয়েছে এবং আগামী ৩ নভেম্বর তাকে আদালতে হাজিরা দিতে হবে।
এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। একজন বিদেশমন্ত্রীর এমন ঘনিষ্ঠ বিতর্কে জড়িয়ে পড়া শুধু বিব্রতকরই নয়, বরং সরকারের নিরাপত্তা প্রটোকল নিয়েও প্রশ্ন তুলছে বিশেষজ্ঞরা।
সূত্রঃ মেইল অনলাইন
এম.কে
১৫ মে ২০২৫