ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে গৃহহীন শরণার্থীদের ওপর নৃশংস আচরণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, এক গর্ভবতী নারী ও তার দুই শিশু কন্যার উপর প্রস্রাব করেছে দুই যুবক। ঘটনাটি ঘটে গত রবিবার রাত ১টার দিকে, প্যারিস সিটি হলের সামনে যেখানে কয়েকশো শরণার্থী অস্থায়ীভাবে অবস্থান করছিলেন।
মানবিক সংস্থা ‘ইউটোপিয়া ৫৬ প্যারিস’ জানিয়েছে, হামলার শিকার নারীটি ছয় বছর ও ১৪ মাস বয়সী দুই শিশুকে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে ছিলেন। তারা জানান, ঘটনাটি “চরম গুরুতর” এবং পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সংগঠনের সদস্যরা হামলাকারীদের দেখে ফেললে তারা পালিয়ে যায়, তবে পুলিশ একজনকে আটক করেছে।
হতভাগ্য মা জানান, ঘটনার পর থেকে তার বড় মেয়ে ঘুমোতে পারছে না এবং আতঙ্কে কাঁদছে। “সে বলছে, তারা আবার এসে তার উপর প্রস্রাব করবে,” বলেন ওই নারী।
সংস্থাটি জানায়, গত ৫ আগস্ট থেকে প্রায় ৩০০ গৃহহীন মানুষ, যার মধ্যে এক ডজন অপ্রাপ্তবয়স্ক ও শতাধিক শিশু রয়েছে, প্যারিস সিটি হলের সামনের প্রাঙ্গণে আশ্রয় নিয়েছে। তারা জরুরি আশ্রয় ও আইন অনুযায়ী ন্যায্য সহায়তা দাবি করছে। কিন্তু পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে।
ছবিতে দেখা গেছে, পরিবারগুলো ত্রিপল ও প্লাস্টিকের ব্যাগ দিয়ে অস্থায়ী ছাউনি তৈরি করেছে। অনেকেই কম্বল বা স্লিপিং ব্যাগে রাত কাটাচ্ছে। গরমে কষ্ট পেলেও তারা আশ্রয় ছাড়তে রাজি নয়। ইউটোপিয়া ৫৬ প্যারিসের সমন্বয়ক নাথান লেকু বলেছেন, “একটি স্থায়ী সমাধান না পাওয়া পর্যন্ত আমরা সরব না।”
বর্তমানে প্রায় ৯০ শিশু, যার মধ্যে ৩০ জনের বয়স তিন বছরের নিচে, সিটি হলের বাইরে অবস্থান করছে। সংস্থাটি প্রতিদিন তাদের সকালের নাস্তা ও দুপুরের খাবার সরবরাহ করছে।
ফ্রান্স গত কয়েক মাস ধরে অভিবাসন সংকটে ভুগছে। গত জুলাইয়ে উত্তর উপকূলীয় শহর গ্রাভলিনে অভিবাসীদের সঙ্গে দাঙ্গা পুলিশদের সংঘর্ষ হয়। এদিকে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে নতুন ‘ওয়ান ইন, ওয়ান আউট’ চুক্তি করেছে ফ্রান্স, যাতে ছোট নৌকায় অভিবাসন ঠেকানো যায়। তবে ফ্রান্স কোন অভিবাসী গ্রহণ করবে তা তারা নিজেরাই ঠিক করবে—যা যুক্তরাজ্যে সমালোচনা সৃষ্টি করেছে।
সূত্রঃ দ্য সান
এম.কে
১৪ আগস্ট ২০২৫