ইংল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে শনিবার ভোর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে প্রবল বজ্রবৃষ্টির দুর্যোগ, যার কারণে হঠাৎ বন্যা, বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও জীবনহানির মতো ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। মেট অফিস সকাল ৪টা থেকে ১১টা পর্যন্ত লন্ডন, ব্রাইটন, পোর্টসমাউথ, চেল্মসফোর্ড, সেন্ট অ্যালব্যান্স ও কেমব্রিজ অঞ্চলের জন্য অ্যাম্বার সতর্কতা জারি করেছে।
বজ্রঝড়ের ফলে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। ট্রেন ও বাস চলাচলে বড় ধরনের বিলম্ব হতে পারে এবং বাতাসের গতি ও শিলা বৃষ্টির কারণে ঘরবাড়ির ক্ষতি হতে পারে বলে সতর্ক করেছে মেট অফিস।
শুক্রবারও বজ্রঝড়ের কারণে দুটি ইয়েলো সতর্কতা বলবৎ ছিল। একটি ইয়র্কশায়ার ও উত্তর-পূর্ব ইংল্যান্ডে সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এবং অপরটি রাত ৯টা থেকে ১১:৪৯ মিনিট পর্যন্ত লন্ডন ও দক্ষিণ-পূর্বে কার্যকর ছিল। শনিবার দেশের প্রায় পুরো অংশ ইয়েলো সতর্কতার আওতায় থাকবে এবং পূর্ব স্কটল্যান্ডেও বিকেল ৪টা থেকে রবিবার দুপুর পর্যন্ত বজ্রঝড়ের সতর্কতা দেওয়া হয়েছে।
রবিবার দুপুর থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম ইংল্যান্ডে নতুন করে সতর্কতা কার্যকর হবে, যা চলবে সোমবার ভোর ৩টা পর্যন্ত। আবহাওয়ার এই চরম রূপের জন্য মেট অফিস উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ুপ্রবাহকে দায়ী করছে, যার ফলে শুক্রবার পূর্ব ইংল্যান্ডের কিছু অংশে তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়ে যেতে পারে।
মেট অফিসের প্রধান আবহাওয়াবিদ জেসন কেলি জানান, সপ্তাহান্তে মধ্য ও দক্ষিণ ইংল্যান্ডে গুমোট, ভারী আবহাওয়া বজায় থাকবে। আগামী সপ্তাহেও ঝড়-বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে, তবে কিছুটা রোদ ও স্বস্তিকর আবহাওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই সাদার্ন ওয়াটার সংস্থা হ্যাম্পশায়ার ও আইল অব ওয়াইট অঞ্চলে হোসপাইপ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বিরল প্রাকৃতিক জলধারা ‘চক স্ট্রিম’ সংরক্ষণের স্বার্থে সোমবার থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে, যার ফলে গার্ডেনে পানি দেওয়া, গাড়ি ধোয়া কিংবা প্যাডলিং পুল ভরার মতো কাজ সীমিত হবে।
পরিবেশ সংস্থা জানিয়েছে, ২০২৫ সালের জুন ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে গরম মাসগুলোর একটি, যেখানে বৃষ্টিপাত ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ২০ শতাংশ কম। টানা দুটি তাপপ্রবাহে পানির চাহিদা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় পূর্ব ও পশ্চিম মিডল্যান্ডসে খরা ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে উত্তর ইংল্যান্ডের অনেক অংশের সঙ্গে সঙ্গে আরও বিস্তীর্ণ অঞ্চল পানির সংকটে পড়েছে।
সূত্রঃ দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট
এম.কে
১৮ জুলাই ২০২৫