ভারতের গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বাসসের বরাত দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বাংলাদেশে অপরাধে অভিযুক্ত অনেককে গ্রেপ্তার না করে গুম করে দেয়া হতো। ক্ষমতায় আসার পর এই অভিযোগ তুলেছে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার।
এবার তাদের তদন্ত কমিশন সেই সব গুমের ঘটনায় প্রতিবেশী ভারতের যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে।
শেখ হাসিনা সরকারের আমলের বিভিন্ন অভিযোগের সত্য উদঘাটনের উদ্দেশ্যে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করে বাংলাদেশ। সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের কমিশন সম্প্রতি একটি রিপোর্ট তুলে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের হাতে। হাসিনার আমলে গুমের ঘটনাগুলিতে ভারতের যোগের কথাই শুধু নয়, ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, এখনো কিছু বাংলাদেশি বন্দি ভারতের জেলে আটকে থাকতে পারেন। দেশের আইন মহলে এই ধরনের কথা চালু আছে বলে জানিয়েছে তদন্ত কমিশন।
কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতে এখনও কিছু বাংলাদেশি বন্দি আটকে থাকতে পারেন। দেশের বিদেশ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে আমাদের প্রস্তাব, তাদের চিহ্নিত করা হোক। কারণ, আমাদের পক্ষে বাংলাদেশের সীমানার বাইরে কিছু করা সম্ভব নয়। আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, ভারতের সঙ্গে হাসিনার ‘ঘনিষ্ঠতা’ প্রথম থেকেই ভাল চোখে দেখছে না ইউনূসের সরকার।
তাদের তদন্ত কমিশন এ-ও দাবি করেছে, দুই দেশের মধ্যে বন্দি বিনিময় করা হয়ে থাকতে পারে। সেই সব বন্দিদের সম্ভাব্য ভাগ্য সম্পর্কেও দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হয়ে থাকতে পারে। এই দাবির প্রেক্ষিতে দু’টি মামলার কথা উল্লেখ করেছে কমিশন।
প্রথমত বলা হয়েছে সুখরঞ্জন বালির কথা, যাকে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে অপহরণ করা হয়েছিল। পরে তাকে ভারতের জেলে পাওয়া যায়।
দ্বিতীয়ত, বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যার অভিজ্ঞতা থেকেও ভারত-বাংলাদেশ যোগের প্রমাণ মেলে বলে দাবি। ২০১৫ সালে ঢাকা থেকে সালাউদ্দিনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, পরে সেই অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন তিনি। ড. ইউনূসের কাছে গত সপ্তাহে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে বাংলাদেশের এই কমিশন।
রিপোর্টের শিরোনাম ছিল ‘সত্য উদঘাটন’। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, হাসিনার আমলে সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষকে গুম করা হয়েছিল। হাসিনা এবং তার একাধিক উপদেষ্টা, মন্ত্রীদের সরাসরি যোগ ছিল সে সব ঘটনায়। মূলত বাংলাদেশের এলিট ফোর্স- র্যাবের (র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন) মাধ্যমে গুম করানো হতো বলে দাবি করেছে কমিশন।
সূত্রঃ বাসস/ আনন্দবাজার পত্রিকা
এম.কে
২২ ডিসেম্বর ২০২৪