কোরবানির ঈদের দিন রাজধানীর বর্জ্য অপসারণে যখন ডিএনসিসির কর্মীরা হিমশিম খাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই বর্জ্য পরিবহনকারী চার চালক ও এক ভারী যন্ত্রচালক হাজির ছিলেন নগর ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে। এই ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) কর্মীদের মধ্যে।
গত শনিবার (৮ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গুলশানে ডিএনসিসির নগর ভবনে ঈদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। একই সময়ে মাঠপর্যায়ে চলছিল বর্জ্য অপসারণের ব্যস্ততা।
অথচ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন—ভারী যানযন্ত্র ১২ নম্বর পে-লোডারের অপারেটর আবুল হোসেন, এবং বর্জ্য পরিবহনকারী বাহন কম্পেক্টরের চার চালক: মো. হারুন (পরী-১০০৩), ইসমাইল হোসেন (পরী-১০১০), নূর হোসেন নিজাম (পরী-১০০৬) ও হোসেন মন্টু (পরী-১০৩৪)।
এদের অনেকেই ডিএনসিসির পরিবহন চালক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্বে রয়েছেন। কর্মীদের অভিযোগ, ঈদের মতো গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দায়িত্ব ফেলে সংবাদ সম্মেলনে তাদের উপস্থিতি সরাসরি বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রমকে ব্যাহত করেছে।
ঈদের রাত সাড়ে ১০টায় ডিএনসিসির জনসংযোগ বিভাগ ১০০ শতাংশ বর্জ্য অপসারণের দাবি করলেও, পরদিন সকালেও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় কোরবানির বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
চালকদের ব্যাখ্যা ও বিতর্কঃ পে-লোডার অপারেটর আবুল হোসেন বলেন, তিনি ঈদের দিন সকাল থেকে কাজ করলেও সংবাদ সম্মেলনে সহকর্মী দিয়ে গাড়ি চালিয়েছেন। “আমার ভাই লিটন কাজ সামলেছে,” দাবি করেন তিনি।
কম্পেক্টর চালক নূর হোসেন নিজাম জানান, তিনি ৭–৮টি ট্রিপ দিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনের সময় তার জায়গায় কাজ করেছেন ফেরদৌস নামে এক চালক, যিনি বিদ্যুৎ বিভাগের হলেও ঈদের দিন অবসর ছিলেন।
তবে করপোরেশনের সূত্র জানায়, এসব চালকরা নিয়মিত দায়িত্বে থাকার কথা এবং ঈদের দিনে তাদের উপস্থিতি ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একাধিক চালক আবার একই গাড়িতে দিনে ও রাতে কাজ ভাগাভাগি করে থাকেন, তাই একজনের অনুপস্থিতি পুরো অপারেশনে প্রভাব ফেলে।
সংবাদ সম্মেলনে দায়িত্বে থাকা চালক-অপারেটরদের উপস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, “কাজ ফেলে কেন তারা সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন, তা জানতে চাওয়া হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এম.কে
০৯ জুন ২০২৫