যুক্তরাজ্যে দিন দিন বর্ণবাদ ও বর্ণবৈষম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। বিশ্লেষক ও শিক্ষাবিদদের মতে ইউকের স্কুলগুলির বিদ্যা কার্যক্রমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সহ বিভিন্ন যুদ্ধের সময়ে কৃষাঙ্গ ও এশিয়ান সৈনিকদের ভুমিকা নিয়ে বেশি বেশি পাঠদান কার্যক্রম চালু রাখা উচিত।
কালো এবং এশিয়ান সৈন্যদের অবদানের আলোচনা করলে বর্ণবাদ বিষয়ে সচেতনতা গড়ে উঠবে। তাছাড়া বর্ণবাদ মোকাবেলায় ব্রিটিশ জাতি গঠনে সংখ্যালঘু জাতিসত্তার ভুমিকা নিয়েও আলোচনা করা উচিত বলে মনে করেন শিক্ষাবিদেরা।
রাজনীতিবিদ এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নেতারা অজ্ঞতা, বর্ণবাদ এবং মুসলিম বিরোধী বর্ণবৈষম্য মোকাবেলায় বিভিন্ন বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটেনের জন্য লড়াই করা কৃষ্ণাঙ্গ ও এশিয়ান সৈন্যদের ইতিহাস নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন।
বেশিরভাগ জনসাধারণ (৫৪%) একমত যে প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে কমনওয়েলথ সৈন্যদের অবদান যতটা সেই পরিমাণ প্রচার করা হয় না।
লিডসের ইমাম জাতীয় উপদেষ্টা বোর্ডের চেয়ারম্যান কারি আসিম ও লেবার সাংসদ ক্যালভিন বেইলি এবং মুসলিম নারী নেত্রী সাইদা ওয়ার্সি নিজেদের বক্তব্যে খোদাদাদ খানের ইতিহাস তুলে ধরেন। খোদাদাদ খান বিশ্বযুদ্ধের একজন যোদ্ধা যিনি একক সাহসিকতায় জার্মান সৈনিকদের বিরুদ্ধে ১৯১৪ সালের ৩১ অক্টোবর প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন বলে তারা তথ্য প্রদান করেন।
কারি আসিম বলেন, “ সংখ্যালঘু মসজিদে আক্রমণ এবং মুসলিম সম্প্রদায়কে হুমকি প্রদান এখন স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদি নতুন প্রজন্ম যুক্তরাজ্যের জন্য মুসলিম ও বিভিন্ন সংখ্যালঘুদের ত্যাগের ইতিহাস জানত তাহলে এই ধরনের আক্রমণাত্মক ঘটনা ঘটতো না।”
উল্লেখ্য যে, বিশ্বযুদ্ধের পরে যুক্তরাজ্যের একটি হাসপাতালে আহত অবস্থায় খোদাদাদ খান চিকিৎসা গ্রহণ করে সুস্থ হন। ১৯১৫ সালে খানকে ভিক্টোরিয়া ক্রস পুরষ্কার প্রদান করা হয়। তিনি এই পুরষ্কার প্রাপ্ত প্রথম ভারতীয় সৈনিক ছিলেন। ভারত-পাকিস্তান বিভক্ত হবার পরে তিনি পাকিস্তানে ফিরে যান। তার ভিক্টোরিয়া ক্রস এখন লন্ডনের ইম্পেরিয়াল ওয়ার মিউজিয়ামে সংগৃহীত আছে বলে জানা যায়।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
৩১ অক্টোবর ২০২৪