প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। ইন্দোনেশিয়ায় সাবমেরিন ক্যাবলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলছে না বলেও জানা যায়। নিরবচ্ছিন্ন পরিষেবা পেতে আরও প্রায় ১ মাস অপেক্ষা করতে হবে৷
বুধবার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইন্টারনেট সেবা দাতা প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ব্যান্ডউইথের এমন সমস্যার কারণে চলতি মাসে তারা অন্তত শত কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কাজ করছে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস পিএলসিও (বিএসসিপিএলসি)।
প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ইন্দোনেশিয়ার জলসীমায় সমুদ্রের তলদেশে ফাইবার কেবল কাটা পড়েছে। দেশটির অনুমোদন নিয়ে সেখানে মেরামত শেষ করতে অন্তত ৫ সপ্তাহ লেগে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে মে মাসের শেষ নাগাদ সংযোগ স্বাভাবিক হতে পারে।
বাংলাদেশ মোবাইল ফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশানের সভাপতি বলেন, তীব্র গরমের মধ্যে ইন্টারনেট সমস্যা গ্রাহকদের অস্বস্তির মধ্যে ফেলেছে। স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ক্লাস করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
কিন্তু শুক্রবার রাত থেকে ইন্টারনেট বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে রেশনিং করে ব্যান্ডউইথ সরবরাহের কারণে প্রান্তিক পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পাওয়া যাচ্ছে না।
তিনি জানান, দ্রুত ইন্টারনেট সমস্যা সমাধান না করা গেলে, এই গরমে ঘরে বসে কাজ করার যে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে এবং অনলাইনে ক্লাস করার জন্য যে নির্দেশনা তা বাস্তবায়ন করা মোটেও সম্ভব হবে না।
এছাড়া অনেক শিল্পকলকারখানা ব্যাংক বিমা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং চিকিৎসা কেন্দ্র ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল। এমনকি মোবাইল অপারেটররাও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা গ্রহণ করে থাকেন। তাই দ্রুত এর সমাধান করতে হবে।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি (আইএসপিএবি) বলেন, করপোরেট গ্রাহক বিশেষ করে কল সেন্টার, ব্যাংক, এমনকি যারা অনলাইন ক্লাস করেন এমন সেবাগুলোয় বিঘ্ন ঘটছে। এছাড়া ইন্টারনেটের ধীরগতির কারণে সফটওয়্যার নিয়ে যারা কাজ করেন, তারাও বিপাকে পড়েছেন।
তাছাড়া ফ্রিল্যান্সাররাও এ নিয়ে আতঙ্কিত। সরকার এ সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে আমরা প্রত্যাশা করছি। অন্যথায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে।
বিএসসিপিএলসি মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন এবং রক্ষণাবেক্ষণ) জানান, ইন্দোনেশিয়া সরকারের অনুমোদন পেলে সাবমেরিনটি মেরামত সম্পন্ন করতে কমপক্ষে ৫ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। সেক্ষেত্রে মে মাসের শেষ নাগাদ সংযোগ স্বাভাবিক হতে পারে।
তিনি বলেন, আমরা বিকল্প উপায়ে বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি। যাইহোক, সব বিকল্প এখনও পুরোপুরি বাস্তবায়িত করা হয়নি। এমনকি প্রথম সাবমেরিন ক্যাবল, যা সিমিউই-৪ নামে পরিচিত, সম্পূর্ণ ব্যান্ডউইথ বহন করতে সক্ষম।
তবে এই জন্য সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে বাড়তি খরচ দিতে হবে। এটি ছাড়াও আরও কিছু বিকল্প রয়েছে। সেগুলো নিয়েও কাজ করা হচ্ছে।
সূত্রঃ বিএসসিপিএলসি
এম.কে
২৬ এপ্রিল ২০২৪