15.8 C
London
October 13, 2025
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

বাংলাদেশের বিমান নিরাপত্তায় ঐতিহাসিক অর্জনঃ যুক্তরাজ্যের ডিএফটি দিলো সর্বোচ্চ রেটিং

বাংলাদেশের বিমান নিরাপত্তা ব্যবস্থায় যুক্তরাজ্যের সর্বশেষ আন্তর্জাতিক মূল্যায়নে এসেছে প্রশংসার ঝড়। যুক্তরাজ্যের পরিবহন দফতর (ডিএফটি) কর্তৃক পরিচালিত সাম্প্রতিক নিরাপত্তা মূল্যায়নে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ঢাকা (এইচএসআইএ) ও ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সিলেট (ওআইএ) উভয়ই ‘অসাধারণ’ রেটিং অর্জন করেছে।

 

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) জানিয়েছে, ২০২৫ সালের আগস্টে সম্পন্ন এই মূল্যায়নে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পেয়েছে ৯৩ শতাংশ সামগ্রিক স্কোর, যেখানে কার্গো নিরাপত্তা বিভাগে অর্জন করেছে পূর্ণ ১০০ শতাংশ। একইসঙ্গে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও ৯৪ শতাংশ সামগ্রিক রেটিং এবং কার্গো ব্যবস্থাপনায় ১০০ শতাংশ স্কোর পেয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে।

ডিএফটির প্রতিনিধি দল তাদের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রস্তুতি, অবকাঠামো ও কর্মীদের পারফরম্যান্সে ‘গভীর সন্তুষ্টি’ প্রকাশ করেছে। এই কর্মসূচি মূলত যুক্তরাজ্যে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনকারী বিদেশি বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা মান যাচাইয়ের জন্য পরিচালিত হয়। ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য যৌথভাবে এই পরিদর্শন কর্মসূচি পরিচালনা করছে, যার আওতায় সময় সময় নিরাপত্তা পর্যালোচনা করা হয়।

বেবিচক বলছে, এই ফলাফল বাংলাদেশের বিমান নিরাপত্তার ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এটি প্রমাণ করে যে দেশের বিমানবন্দরগুলো এখন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মানের সঙ্গে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ। সংস্থাটি তাদের এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “এই অর্জন আমাদের বিমান নিরাপত্তা ব্যবস্থার দৃঢ়তা, পেশাদারিত্ব ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতার প্রতিফলন, যা জাতীয় ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা উভয়ের জন্যই তাৎপর্যপূর্ণ।”

২০১৬ সালে নিরাপত্তা ঘাটতির কারণে ঢাকা থেকে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্য পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। এর ফলে রফতানিকারকদের তৃতীয় দেশে পুনরায় স্ক্রিনিং করাতে হতো, যা ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ ছিল। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে সিএএবি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অবকাঠামো, সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণে ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করেছে। বিশেষ করে কার্গো নিরাপত্তায় যুক্ত হয়েছে আধুনিক বিস্ফোরক শনাক্তকরণ ব্যবস্থা (ইডিএস) ও বিস্ফোরক শনাক্তকারী কুকুর (ইডিডি) প্রযুক্তি।

বেবিচক আরও জানায়, যুক্তরাজ্যের এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের বৈশ্বিক অংশীদারদের আস্থা আরও দৃঢ় করবে। বিবৃতিতে বলা হয়, “এই সাফল্য শুধু আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিই নয়, এটি বিদেশি বিমান সংস্থা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ভবিষ্যতে এটি বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতা হ্রাস করবে এবং বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম নিরাপদ বিমান পরিবহন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।”

সংস্থাটি ধারাবাহিক উন্নয়নের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেছে, “দূরদর্শী নেতৃত্ব, শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণ কাঠামো এবং কার্যকর নিরাপত্তা বাস্তবায়নের ফলেই এই সাফল্য সম্ভব হয়েছে। আমরা বিমান নিরাপত্তাকে আরও আধুনিক, টেকসই ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করতে বদ্ধপরিকর।”

সূত্রঃ বাসস

এম.কে
১৩ অক্টোবর ২০২৫

আরো পড়ুন

সৎ মায়ের উপর অত্যাচারের ঘটনায় শাওনের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃত্ব নিয়ে নতুন বিতর্ক

বাংলাদেশে বিয়ে করতে আর ট্যাক্স দিতে হবে না: আইন উপদেষ্টা