TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামায়াতের সাথে ঐকমত্য ভেঙে দূরত্বে এনসিপি

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির মধ্যে যে রাজনৈতিক সখ্যতা গড়ে উঠেছিল, তা হঠাৎ করেই শিথিল হয়ে পড়েছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ সংস্কারমূলক দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের প্রস্তুতি থাকলেও শেষ মুহূর্তে এনসিপি সরে দাঁড়িয়েছে। এতে রাজনীতির মাঠে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে—এটি কি সাময়িক কৌশল, নাকি গভীর মতাদর্শগত বিভাজনের প্রতিফলন?

সোমবার জামায়াতে ইসলামী ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও নেজামে ইসলাম পার্টির একাংশকে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দেয়। কিন্তু সেই কর্মসূচিতে নেই এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ ও এবি পার্টি। এনসিপি বলছে, আন্দোলনের সব দাবিতে তাদের সমর্থন নেই। বিশেষত পিআর পদ্ধতি নিয়ে মতপার্থক্যই মূল বাধা। জামায়াত যেখানে উচ্চ ও নিম্নকক্ষ উভয় স্তরে পিআর পদ্ধতি চায়, সেখানে এনসিপি কেবল উচ্চকক্ষে এর পক্ষে।
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, “সংস্কারের সব দাবিতে একমত না হওয়া ও নির্বাচনি জোট নিয়ে অস্পষ্টতা থাকায় আপাতত জামায়াতের সাথে একসাথে আন্দোলনে যাচ্ছি না।” তিনি আরো জানান, এনসিপি আপাতত নিজস্ব কর্মসূচিতেই মনোযোগী থাকবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এনসিপি কৌশলগতভাবে কিছুটা দূরত্বে গেলেও নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসলে আবারো তাদের অবস্থান পরিবর্তন হতে পারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাশেদা রওনক খান বলেন, “লক্ষ্য এক হলেও লক্ষ্য অর্জনের পথে স্বার্থ ও মতাদর্শগত কারণে দলগুলোর মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই দূরত্ব তৈরি হয়।”

অন্যদিকে, এনসিপির অভ্যন্তরে বিভাজনও স্পষ্ট হচ্ছে। গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে দলটিতে ইসলামপন্থী ও বামঘরানার তরুণরা একসাথে যুক্ত হলেও এখন এ দুই অংশের মধ্যে জামায়াতের সাথে সম্পর্ককে ঘিরে মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে। বাম বলয়ের অংশ জামায়াত ঘেঁষা অবস্থানের বিরোধিতা করছে।

পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনের ফলাফল। সেখানে এনসিপি-সমর্থিত ছাত্র সংগঠন বাগছাস ভরাডুবির মুখে পড়ে, আর ইসলামী ছাত্রশিবির নিরঙ্কুশ জয় পায়। এই ব্যর্থতায় এনসিপির নেতৃত্বে হতাশা তৈরি হয়েছে এবং জামায়াতের সাথে জোটবদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন আরও ঘনীভূত হয়েছে।

জামায়াত অবশ্য আশাবাদী যে, এনসিপি এখন না এলেও ভবিষ্যতে অবস্থান বদলাতে পারে। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, “আমাদের সাথে এনসিপির অনেক দাবির মিল রয়েছে। তারা আপাতত কর্মসূচিতে নেই, তবে ভবিষ্যতে অবস্থান পরিবর্তনের সম্ভাবনা আছে।”

ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের আগে বিএনপি-বিরোধী জোট গড়ার চেষ্টা করছে জামায়াত ও ইসলামী দলগুলো। কিন্তু সেখানে এনসিপি শেষ পর্যন্ত থাকবে কি না, সেটিই এখন রাজনৈতিক মহলে আলোচনার মূল বিষয়।

সূত্রঃ বিবিসি বাংলা

এম.কে
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আরো পড়ুন

বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না সিলেটের মুরারিচাঁদ কলেজের

অনলাইন ডেস্ক

বন্যার্তদের জন্য ১১ লক্ষাধিক টাকা দিলেন রোহিঙ্গা শরণার্থীরা

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৫ উড়োজাহাজ কিনবে বাংলাদেশ সরকার