ভারতের ওড়িশাসহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে এসে আটকা পড়া শ্রমিকদের ফেরাতে ব্যবস্থা নিচ্ছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। শ্রমিকদের ফেরাতে ইতোমধ্যে দেশটির কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ শুরু করেছে বিভিন্ন রাজ্যের সরকার।
মঙ্গলবার ওড়িশা রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী গণেশ রাম সিংখুনটিয়া বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মোহন মাঝির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। প্রতিবেশি দেশে কতজন আটকা পড়েছেন, তা সরকার নিশ্চিত নয়। যে কারণে জেলা শ্রম কর্মকর্তাদের বাংলাদেশে পাড়ি জমানো শ্রমিকদের একটি তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। তবে অনেক শ্রমিক অনানুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে যান।
মন্ত্রী বলেন, খুব কমসংখ্যক শ্রমিকই সংশ্লিষ্ট শ্রম কর্মকর্তাকে অবহিত করার পর সরকারি রুট ব্যবহার করে বাংলাদেশে যান। এমনকি পরিবারের সদস্যরাও তাদের প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে কার কাছে যেতে হবে সেটি জানেন না। তারাও চাপের মাঝে রয়েছেন।
ওড়িশার এই মন্ত্রী বলেন, এ কারণে আমি শ্রমিকদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য শ্রম কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছি। বাংলাদেশে যাওয়া শ্রমিকরা কারা, তারা কোথায় আটকা পড়েছেন, এখন তাদের অবস্থা কী এবং তারা পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করছেন কি না, এসব বিষয়ে খোঁজ নিতে বলেছি।
বাংলাদেশে আসা বেশিরভাগ ভারতীয় শ্রমিক টেক্সটাইল কারখানায় নিয়োজিত এবং অন্যরা স্যানিটেশন, রঙ মিস্ত্রি ও রাজমিস্ত্রি হিসাবে কাজ করেন। সিংখুনটিয়া বলেন, তারা কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করছেন এবং যারা সরকারি চ্যানেল ব্যবহার করে বাংলাদেশে গিয়েছেন, মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় তাদের বিষয়ে একটি তালিকা তৈরি করা হবে।
ভারতের এই মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা একটি টোল ফ্রি নম্বর চালু করব এবং শ্রমিকদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন কাজের জন্য কিছু কর্মকর্তাকে নিয়োগ করব। আমরা স্থানীয় ও জাতীয় বিভিন্ন দৈনিকে বিজ্ঞাপন দেব; যেখানে সুবিধার জন্য টোল ফ্রি নম্বর, করণীয় এবং অন্যান্য বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ থাকবে।’’
দেশটির অভিবাসনবিষয়ক গবেষক উমি ড্যানিয়েল। এর আগে শ্রীলঙ্কা সংকটের সময় দেশটি থেকে ভারতীয় আট শ্রমিককে উদ্ধারে সহায়তা করেছিলেন তিনি। উমি ড্যানিয়েল বলেন, শ্রমিকরা বিভিন্ন ধরনের প্লেসমেন্ট এজেন্সির মাধ্যমে দেশের বাইরে যান। আর এই শ্রমিকদের বেশিরভাগই নির্মাণ, তেল অনুসন্ধান এবং ভারী শিল্প খাতে কাজ করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে রাজধানী ও এর আশপাশের অঞ্চলগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে শ্রমিকদের শনাক্ত করা কঠিন। কারণ শ্রমিকদের মধ্যে অনেকেই হয়তো মোবাইল ফোন হারিয়েছেন।
ড্যানিয়েল বলেন, ওড়িশার গাঞ্জাম জেলা ও উপকূলীয় এলাকা থেকে শ্রমিকরা কাজের জন্য বাংলাদেশে পাড়ি জমান। যদি তাদের বৈধ পাসপোর্ট থাকে, তাহলে সেটি তাদের সঙ্গে রাখা উচিত। অনেক সময় কোম্পানিগুলো শ্রমিকদের পাসপোর্ট জমা নেয়, যা পরবর্তীতে শ্রমিকদের ঝামেলায় ফেলে।
সূত্রঃ টাইমস অব ইন্ডিয়া
এম.কে
২১ আগস্ট ২০২৪