বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাধ্যমে বাংলাদেশে ‘আরব বসন্তের’ সম্ভাবনার কথা বলেছিল মস্কো। তবে আট মাসের ব্যবধানে সেই অবস্থান থেকে সরে ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেছেন, আমার কাছে এ ধরনের কোনো তথ্য নেই।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আরব বসন্তের কথা অস্বীকার করেন রাষ্ট্রদূত।
বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গত ডিসেম্বরে মস্কো বলেছিল, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে আরব বসন্তের মতো পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ছাত্র-জনতার আন্দোলন কি সেই বসন্ত? এমন প্রশ্নের উত্তরে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, আমার কাছে এ ধরনের কোনো তথ্য নেই। আপনাদের কাছে থাকলে, সেটা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন।
গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর ‘বাংলাদেশ’ বিষয়ে এক বিবৃতি দিয়েছিলেন রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা। সেই বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে ভোটের ফল যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সন্তোষজনক মনে না হলে ‘আরব বসন্তে’র মতো করে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা হতে পারে। এমন আশঙ্কার গুরুতর ভিত্তি রয়েছে যে, আগামী সপ্তাহগুলোতে পশ্চিমা শক্তিগুলোর পক্ষে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকমের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে।
বিবৃতিতে বাংলাদেশে চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সঙ্গে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের (সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত) উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের সরাসরি সম্পর্কের কথা উল্লেখ করা হয়।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছিলেন, বাংলাদেশের শিল্প খাতের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোর উপর আঘাত আসতে পারে। সেই সঙ্গে কিছু সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় সংসদ নির্বাচনে নাগরিকদের গণতান্ত্রিক রায় প্রদানে বাধাদানের তথ্যপ্রমাণহীন অভিযোগ তুলে পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত হবে, এমন সম্ভাবনা কম বলেও রাশিয়া মনে করছে বলে জানিয়েছিলেন মারিয়া জাখারোভা।
চলমান পরিস্থিতির কারণে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ প্রক্রিয়া কিছুটা বিলম্ব হতে পারে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্দার মান্তিতস্কি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, আমি বুঝতে পারছি, চলমান পরিস্থিতিতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রক্রিয়া অল্প দেরি হতে পারে। তবে এটা খুব বেশি সময় বিলম্ব হবে না।
রুশ রাষ্ট্রদূত বলেন, গত বছর রাশিয়া বাংলাদেশে ২.২৭ মিলিয়ন গম রপ্তানি করেছিল। এ বছরের প্রথম ৬ মাসে ১.৯ মিলিয়ন গম রপ্তানি হয়েছে। এছাড়া কৃষিখাতের জন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে সার রপ্তানি সহযোগিতাও অব্যাহত থাকবে।
এম.কে
১৫ আগস্ট ২০২৪