বাংলাদেশব্যাপী জরিপে দেখা গেছে, গত ছয় মাসে বিএনপি তাদের শক্ত অবস্থান ধরে রাখলেও আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে। ইনোভিশন কনসালটিং পরিচালিত জরিপটি ২ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে হয়, যেখানে ১০,০০০ এরও বেশি উত্তরদাতা অংশ নেন। এতে মার্চের তুলনায় আওয়ামী লীগের ভোট সমর্থন পাঁচ শতাংশ বেড়ে ১৪ থেকে প্রায় ১৯ শতাংশে পৌঁছেছে।
তবে এই বৃদ্ধি সত্ত্বেও আওয়ামী লীগ এখনও বিএনপি ও জামায়াতের চেয়ে অনেক পিছিয়ে। বিএনপি ৪১.৩ শতাংশ সমর্থন নিয়ে শীর্ষে রয়েছে, যদিও মার্চের তুলনায় এটি সামান্য কম। জামায়াত ৩০.৩ শতাংশ সমর্থন পেয়েছে, যা আগের তুলনায় এক শতাংশের বেশি হ্রাস পেয়েছে। ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের নতুন দল ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি) সমর্থন হারিয়ে এখন ৪ শতাংশে নেমে এসেছে।
ভোটারদের প্রায় অর্ধেক তাদের পছন্দ প্রকাশ করেছেন, যা মার্চে ছিল ৪০.৭ শতাংশ। তবে ৯৪ শতাংশ বলেছেন তারা ভোট দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। খুব কম সংখ্যক মানুষ ভোট বয়কটের কথা ভাবছেন। বরিশাল বিভাগে আওয়ামী লীগ ৩২ শতাংশ নিয়ে এগিয়ে, যদিও জাতীয় পর্যায়ে বিএনপি ও জামায়াতের সম্মিলিত সমর্থন ৭০ শতাংশের বেশি।
বিভাগীয়ভাবে বিএনপি প্রায় সব জায়গায় এগিয়ে থাকলেও বরিশাল ও রংপুরে জামায়াত শক্ত অবস্থানে রয়েছে। রংপুরে একসময় প্রভাবশালী জাতীয় পার্টি এখন সমর্থন হারিয়েছে। রাজশাহীতেও জামায়াত বিএনপির কাছাকাছি অবস্থানে আছে।
জামায়াতের বর্তমান জনপ্রিয়তা তাদের জন্য ঐতিহাসিক। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে দলটি জাতীয় ভোটের মাত্র ১২.৩ শতাংশ পেয়েছিল। এবার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ভোটার তাদের সমর্থন করছেন। তবে ফার্স্ট-পাস্ট-দ্য-পোস্ট ব্যবস্থার কারণে তাদের এ সমর্থন সংসদীয় আসনে রূপান্তরিত নাও হতে পারে। এ কারণেই দলটি আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থার দাবি জোরদার করেছে।
দলগুলোর প্রতি সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টির দিক থেকে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের অবস্থা নেতিবাচক। বিএনপির নেট সন্তুষ্টি মাইনাস ৬.৭ শতাংশ, আর আওয়ামী লীগের মাইনাস ১৮ শতাংশ। বিপরীতে জামায়াতের নেট রেটিং ইতিবাচক ১০ শতাংশ।
যদিও সমালোচনার মুখে আছে বিএনপি, তবুও জরিপে দেখা গেছে ভোটাররা নেতৃত্বের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত দল হিসেবে বিএনপিকেই দেখছেন। উত্তরদাতাদের ৩৯ শতাংশ বলেছেন, বিএনপি দেশ পরিচালনায় সেরা, যা জামায়াতের চেয়ে ১১ পয়েন্ট এগিয়ে।
জেনারেশন জেড ভোটারদের মধ্যে বিএনপি ও জামায়াত সমান সমর্থন পাচ্ছে। জামায়াত তরুণ ভোটারদের দিকে মনোযোগী, বিশেষত ঢাকার ছাত্র পরিষদ নির্বাচনে সাফল্যের পর। অন্যদিকে, বিএনপি মিলেনিয়ালস, জেনারেশন এক্স ও বেবি বুমারদের মধ্যে বেশি জনপ্রিয়।
জরিপে আরও উঠে এসেছে চাঁদাবাজি প্রসঙ্গ। অর্ধেকের বেশি উত্তরদাতা বলেছেন গত ছয় মাসে চাঁদাবাজি বেড়েছে। তবে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এ কথা বলেছেন মাত্র ১১.৭ শতাংশ। বাকিরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোনা তথ্য থেকে ধারণা করেছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি রাজনৈতিক বিতর্কে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাবকে স্পষ্ট করে।
সূত্রঃ স্যোশাল মিডিয়া
এম.কে
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫