বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশে মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে জ্বালানি তেলের দাম ৫০% এর বেশি বেড়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতকে তেলের দাম বৃদ্ধির জন্য দায়ী করা হচ্ছে। শ্রীলঙ্কার পর দক্ষিণ এশিয়ার আরেকটি দেশ ক্রমবর্ধমান আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হওয়ায় হাজার হাজার মানুষ প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে।
বাংলাদেশে জ্বালানির দামের অপ্রত্যাশিত বৃদ্ধির ফলে পেট্রোলের দাম প্রতি লিটার ৮৬ টাকা থেকে ১৩০ টাকায় (১.১৩ পাউন্ড) হয়েছে। ডিজেল এবং কেরোসিনের দামও ৪২.৫% বেড়েছে।
মোহাম্মদ নুরুল হোসেন গত নয় বছর ধরে একটি পরিবহন সংস্থায় কাজ করছেন, মৌলিক চাহিদা পূরণের অর্থ খরচ সামলাতে সংগ্রাম করছেন তিনি বর্তমানে৷ উত্তরের শহর দিনাজপুরে বসবাসকারী ৩৫ বছর বয়সী এই যুবক তার নিজ শহর থেকে তাজা পণ্য রাজধানী ঢাকায় নিয়ে যান।
‘আমি যখন বাজারে যাই, আমি আমার পরিবারের জন্য পর্যাপ্ত খাবার কিনতে পারি না। জ্বালানির দাম এভাবে বাড়তে থাকলে আমি আমার বাবা-মায়ের দেখাশোনা করতে পারব না বা আমার সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে পারব না।’ তিনি বলেন।
সাথে আরো বলেন, ‘আমি যদি আমার চাকরি হারাই, তাহলে আমাকে রাস্তায় ভিক্ষা করা শুরু করতে হতে পারে।’
১৬৮ মিলিয়নেরও বেশি লোকের দেশটিতে অগণিত মানুষ একইরকম দুর্দশার মুখোমুখি হচ্ছে।
‘আমরা জানি দাম অনেক বেশি বেড়েছে, কিন্তু বিদেশে জ্বালানির দাম বাড়লে আমরা কী করতে পারি?’ বাংলাদেশের জ্বালানিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন।
সরকারের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার অভিযোগ অস্বীকার করে মি: হামিদ বলেন, তার প্রশাসন অতীতে বৃদ্ধি এড়াতে ভর্তুকি দিয়েছিল, কিন্তু বৃদ্ধি এখন অনিবার্য।
নসরুল হামিদ বিশ্বাস করেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমলেও তার দেশ শ্রীলঙ্কার পরিণতি এড়াবে।
উল্লেখ্য, জুলাই মাসে, বাংলাদেশ – যার অর্থনীতি বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল হিসাবে প্রশংসিত হয়েছিল, শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তানের পরে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য তৃতীয় দক্ষিণ এশিয়ার দেশ হয়ে উঠেছে।
১৪ আগস্ট ২০২২
এনএইচ