6.4 C
London
December 23, 2024
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

বাংলাদেশ নিয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ

কোটা সিস্টেম নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ২০২৪ সালের জুন মাস হতে শুরু হয়েছিল। কিন্তু এই নৈতিক দাবি ও আন্দোলনকে স্তিমিত করার জন্য সহিংসতাকে বেছে নিয়েছিল আওয়ামীলীগ সরকার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠে। আন্দোলন থামানোর নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিশৃংস ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্বারা কমপক্ষে ৩২ জন শিশু এবং কয়েকশো মানুষ নিহত হন। হাজার হাজার সাধারণ জনগণ ও শিক্ষার্থী আহত হয় বলে তথ্যমতে জানা যায়। যার কারণে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা জরুরি। স্বাধীন তদন্তের মাধ্যমে নিশ্চিত করা প্রয়োজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আন্দোলন দমনে কতটুকু অপ্রয়োজনীয় শক্তি ব্যবহার করেছিল।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশবাহিনী,র‍্যাব,বিজিবি,ডিবি বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডে জড়িত হয়ে পড়েছিল বলে জানা যায়। তাছাড়া গত প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় হতে বিভিন্ন মানুষকে গ্রেপ্তার এবং আটক করা হচ্ছিল প্রতিনিয়ত। কার্যকরভাবে অনেক ব্যক্তি নিখোঁজ ও গুম হন। মত প্রকাশের স্বাধীনতা ছিল না বাংলাদেশে। শান্তিপূর্ণ সমাবেশ আয়োজনেও বিধিনিষেধ আরোপ ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার।

গত এক যুগের নানা অত্যাচারের প্রতিবাদে তাই একসাথে আন্দোলনে নেমে পড়ে সারা বাংলাদেশের মানুষ। সকলের মিলিত প্রতিবাদ বাংলাদেশে দ্রুত ও নাটকীয় রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপট সৃষ্টি করে। আওয়ামীলীগ সরকার ৫ ই আগস্ট ২০২৪ সালে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয় এবং একটি বেসামরিক অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে গঠিত হয়। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাজ হবে নতুন একটি নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা। ইতিমধ্যে দীর্ঘমেয়াদী রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। গুম ও নিখোঁজ হওয়া অনেক ব্যক্তি মুক্তি পেয়েছেন।

পুলিশ মহাপরিদর্শক এবং আধাসামরিক র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের প্রধানকে পরিবর্তন করা হয়েছে। যদিও পুলিশ ও নানা সুরক্ষা বাহিনী আরও ব্যাপক পরীক্ষার মধ্য যাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। বাংলাদেশের এই রূপান্তরটি বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক শৃঙ্খলা ও আইনের শাসন পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করবে। দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলিকে সংস্কার করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে এবং মানবাধিকার সুরক্ষার দিকে জোরদার ভুমিকা নিতে হবে।

একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হ’ল জুলাই থেকে সংগঠিত সমস্ত অভিযোগ, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং সহিংস ক্রিয়াকলাপ সম্পর্কে বিস্তৃত, নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ তদন্ত পরিচালনা করা। ক্ষতিগ্রস্থদের পূনর্বাসনের ব্যবস্থা ও সকল ধরনের অন্যায় আচরণের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং এর যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে তা রোধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস ও সেনাবাহিনী প্রধান সমস্ত বেআইনী মৃত্যুর তদন্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ২০২৪ সালের ৪ ই আগস্ট এক প্রেস বিবৃতিতে, মানবাধিকার কমিশনের হাই কমিশনার সুপারিশ করেছিলেন যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং জনসাধারণের আস্থা নিশ্চিত করতে একটি স্বাধীন জাতীয় তদন্ত কমিশন গঠন হওয়া উচিত।

জুলাই মাস থেকে ৬ আগস্ট ২০২৪ অবধি যে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে তা বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের। প্রাথমিক তথ্যে জানা যায় এই সময়ের মধ্যে ইন্টারনেট অ্যাক্সেসও বাঁধাগ্রস্ত করে আওয়ামীলীগ সরকার। ২০২৪ সালের ২৩ জুলাই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি চিঠিতে মানবাধিকার কমিশনের হাই কমিশনার বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগ নিয়ে উদ্বেগ উত্থাপন করেছিলেন। একটি ওএইচসিএইচআর ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং দলকে বাংলাদেশে মোতায়েনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। প্রাক্তন পরারাষ্ট্র মন্ত্রী,৩০ জুলাই ২০২৪ তারিখে একটি প্রতিক্রিয়াতে এই কথাটি উল্লেখ না করে গোপন করে গিয়েছিলেন।

বর্তমান পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের দায়বদ্ধতার সাথে সামঞ্জস্য রেখে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ীদের জবাবদিহিতা এবং কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য বেশ কয়েকটি সুপারিশ করা হয়েছে। এই সুপারিশগুলি বর্তমান পরিস্থিতিতে উত্তেজনা দমনে সহায়ক হবে।

বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত করা হয়েছে এবং ৮ আগস্ট ২০২৪ সালে প্রধান উপদেষ্টার শপথ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট একটি পরামর্শমূলক মতামত দিয়েছে বর্তমান বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সাংবিধানিক শূন্যতা এবং রাষ্ট্রের কার্যনির্বাহী ব্যবস্থা ও কার্যাদি পরিচালনা করার প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতি একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়োগের ক্ষমতা রাখেন বলে মত দিয়েছে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট।

সূত্রঃ ইউএন হিউম্যান রাইটস

এম.কে
১৭ আগস্ট ২০২৪

আরো পড়ুন

প্রবাসীদের কর্মসংস্থান নিয়ে শঙ্কার কথা

অনলাইন ডেস্ক

নিজের কার্টুন আঁকায় মেহেদি হাসানের প্রশংসায় তারেক রহমান

জগন্নাথপুরে আইইএলটিএস পাস করলেই ১৫-২০ লাখ টাকার ‘চুক্তিভিত্তিক বিয়ে’