বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের তিনটি স্থলবন্দর বন্ধ এবং একটি স্থলবন্দরের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অবকাঠামো গড়ে না ওঠা, বাণিজ্যিক কার্যক্রমের অভাব ও অলাভজনক অবস্থার কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বন্ধ হতে যাওয়া বন্দরগুলো হলো—নীলফামারীর চিলাহাটি, চুয়াডাঙ্গার দৌলতগঞ্জ এবং রাঙামাটির তেগামুখ স্থলবন্দর। আর হবিগঞ্জের বাল্লা স্থলবন্দরের কার্যক্রম ভারতীয় অংশে অবকাঠামো না থাকায় সাময়িকভাবে স্থগিত থাকবে।
চলতি বছরের ২৮ জুলাই পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের সভাপতিত্বে আন্তমন্ত্রণালয় সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। সভায় পরিকল্পনা বিভাগ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে দেশে ২৪টি সরকারি স্থলবন্দর রয়েছে, যার মধ্যে আটটি অলাভজনক ও নিষ্ক্রিয় হিসেবে চিহ্নিত।
চিলাহাটি স্থলবন্দর ২০১৩ সালে ঘোষণা করা হলেও এখানে কোনো জমি অধিগ্রহণ বা অবকাঠামো নির্মাণ হয়নি। রেল সংযোগ থাকলেও ভারতীয় অংশে প্রয়োজনীয় স্থাপনা নেই এবং নিকটবর্তী বুড়িমারী স্থলবন্দর ৬০ কিলোমিটার দূরে থাকায় বন্দরটি বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছে।
দৌলতগঞ্জ স্থলবন্দরও ২০১৩ সালে ঘোষিত হলেও বহু আগে শুল্কস্টেশন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। নিজস্ব জমি বা অবকাঠামো নেই এবং মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে দর্শনা স্থলবন্দর থাকায় এটি বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রাঙামাটির তেগামুখ স্থলবন্দর ২০১৩ সালে ঘোষিত হলেও এখানে সড়ক যোগাযোগ নেই এবং কোনো আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমও নেই। ভারতীয় অংশেও সংযোগ সড়ক না থাকায় কমিটি বন্দরটি বন্ধের সুপারিশ করেছে।
অন্যদিকে, হবিগঞ্জের বাল্লা স্থলবন্দরে ৪৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ব্যয়ে জমি অধিগ্রহণ ও অবকাঠামো নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। তবে ভারতীয় অংশে সড়ক ও অবকাঠামো না থাকায় নতুন স্থানে কার্যক্রম চালু সম্ভব হয়নি। পুরনো বাল্লা শুল্কস্টেশনের মাধ্যমে সীমিত আমদানি-রপ্তানি চলমান থাকলেও নবনির্মিত স্থানে কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, অন্যান্য অলাভজনক স্থলবন্দরে অপ্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং বিকল্প ব্যবহারযোগ্যতা যাচাই করা হবে।
সূত্রঃ বিজনেস ইনসাইডার
এম.কে
১২ আগস্ট ২০২৫