27.9 C
London
August 12, 2025
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

বাংলাদেশ সেভেন সিস্টারের সমুদ্র অভিভাবকঃ ড. ইউনুস

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রসঙ্গে পরোক্ষভাবে মন্তব্য করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন এবং চীনকে এই অঞ্চলে তাদের উপস্থিতি “প্রসারিত” করার আহ্বান জানিয়েছেন বলে এনডিটিভি জানিয়েছে।

বেইজিং সফরের চার দিনের মধ্যে তার এ মন্তব্য ভারতের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।

একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে, ইউনুস বাংলাদেশে চীনের একটি ঘাঁটি প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিচ্ছেন, যা পরোক্ষভাবে ভারতের কৌশলগত অবস্থানকে চ্যালেঞ্জ জানায়।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানা যায় ড. ইউনুসের উদ্ধৃতি দিয়েছেন, “ভারতের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত সাতটি রাজ্য—যাদের সাত বোন রাজ্য বলা হয়—সম্পূর্ণভাবে স্থলবেষ্টিত। তাদের সমুদ্রে পৌঁছানোর কোনো উপায় নেই। আমরা বাংলাদেশ পুরো অঞ্চলের অর্থাৎ উত্তর-পূর্ব ভারতের সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক।”

তিনি আরও বলেন, “এটি চীনের জন্য বিশাল সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেয়—এটি চীনা অর্থনীতির এক প্রসার হতে পারে। এখানে শিল্প স্থাপন করুন, বাজার তৈরি করুন,  সারা বিশ্বে রপ্তানি করুন।”

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সঞ্জীব সান্যাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ ইউনুসের মন্তব্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

সঞ্জীব সান্যাল প্রশ্ন করেন, “মজার ব্যাপার হলো, ইউনুস জনসমক্ষে চীনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন যে ভারতের সাতটি রাজ্য স্থলবেষ্টিত। চীন বাংলাদেশের বিনিয়োগে স্বাগতম, তবে সাতটি ভারতীয় রাজ্যের স্থলবেষ্টিত হওয়ার প্রকৃত তাৎপর্য কী?”

তাছাড়া ড. ইউনুসের চীন সফর শেষে, চীন চট্টগ্রামে চীন অর্থনৈতিক ও শিল্পাঞ্চল সম্প্রসারণে ৩৫০ মিলিয়ন ডলার প্রজেক্ট ঘোষণা করেছে এবং প্রযুক্তিগত সহায়তার জন্য আরও ১৫০ মিলিয়ন ডলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যা নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ হতে যাচ্ছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

ইউনুস নদীর পানি ব্যবস্থাপনায় চীনের দীর্ঘমেয়াদি সহায়তা চেয়ে বেইজিংকে ৫০ বছরের জন্য সহযোগিতার প্রস্তাবও দেন। “চীন পানি ব্যবস্থাপনার মাস্টার,” উল্লেখ করে ড. ইউনুস বলেন, ঢাকা চীনের অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে আগ্রহী।

নদী নিয়ে মূল আলোচনার বিষয় ছিল তিস্তা নদী, যা বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে ব্যবহার করে। আগে শেখ হাসিনার সরকার নয়াদিল্লির সহযোগিতা চাইলেও ইউনুসের প্রশাসন এখন বেইজিংয়ের দিকে ঝুঁকছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

এছাড়া, তিব্বত থেকে ভারতে এবং পরে বাংলাদেশে প্রবাহিত যারলুং জাংবো-যমুনা নদীর জলবিদ্যুৎ তথ্য বিনিময়ের জন্য বাংলাদেশ-চীন একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

ইউনুসের মন্তব্য এবং ঢাকার বেইজিংয়ের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের ভূ-রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান ফলাফল নিয়ে চিন্তার ভাঁজ সৃষ্টি করেছে নরেন্দ্র মোদির কপালে।

সূত্রঃ এনডিটিভি

এম.কে
০১ এপ্রিল ২০২৫

আরো পড়ুন

পারফিউম ব্যবসার আড়ালে দেশের সবচেয়ে বড় হুন্ডি তৎপরতার প্রমাণ পেয়েছে এনবিআর

বাংলাদেশে আসতে ভারতীয় ভিসা প্রত্যাশীদের লম্বা লাইন

সব মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান