কেন্টের একটি সৈকতের রোয়িং বোটের নীচে অবৈধভাবে বাস করে আসছেন একজন সিরিয়ান আশ্রয়প্রার্থী। গত বছরের গ্রীষ্ম কাল হতে তিনি এখানে বসবাস করে আসছেন। তিনি নিজেকে ফাঁদে আটকা প্রাণীর সাথে তুলনা করে বলেন, “লন্ডনে আমার জন্য অবহেলা ছাড়া কিছুই নেই।আমি চলে যেতে চাই এখান থেকে।”
২৫ বছর বয়সী সিরিয়ান অবৈধ আশ্রয়প্রার্থী ব্রিটেন ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলেও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
আলা এলডিন নামের এই যুবককে লিডসের একটি অভিবাসী হোটেল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল এবং তখন থেকে তিনি ক্রস-চ্যানেলে লরিতে লুকিয়ে ফ্রান্সে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
প্রতিবার যখন তিনি পালানোর চেষ্টা করেছেন, পুলিশ তাকে সনাক্ত করেছে এবং কেন্টে ফিরিয়ে দিয়েছে। তিনি ২০২১ সালের আগস্টে ফ্রান্স হতে একটি ডিঙ্গিতে করে প্রথম যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছিলেন। যুক্তরাজ্যে আসার আগে তিনি পরিবারের সদস্যদের সাথে জার্মানিতে থাকতেন বলে খবরে জানা যায়।
২৫ বছরের এই যুবক তার দেশ সিরিয়া থেকে পালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, কারণ সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের কারণে সেনাবাহিনীতে নিযুক্ত হওয়ার ভয় ছিল তার।
যুক্তরাজ্যে পৌঁছে, অবৈধভাবে কিছুদিন চাকুরী করেছিলেন তিনি তাছাড়া হোম অফিস হতে হোটেল হতে বিতাড়িত হবার আগে অবস্থান করতেন লিডসের ব্রিটানিয়া হোটেলে। যখন তার আশ্রয়ের দাবি প্রত্যাখ্যান হয় হোম অফিস দ্বারা তখন তিনি ফ্রান্সে যাওয়ার জন্য ডোভারের দিকে রওনা হন।
তিনি ডেইলি মেইলকে বলেন, “ আমার কাছে কিছু ইউরো ছিল যা আমি নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে কাজ করে আয় করেছিলাম। কিন্তু এখন সব চুরি হয়ে গিয়েছে। আমি এখন নিঃস্ব ও শূন্য। ইংলিশ চ্যানেল দিয়ে ইউকেতে প্রবেশ করা অনেক লোক এখন চলে যেতে চায় কারণ এখানে আমাদের জন্য মৌলিক অধিকার নেই, ঠান্ডায় থাকার জন্য ঘর নেই, কাপড় নেই,খাবার নেই বলতে গেলে কিছুই নেই।”
তিনি জানান চ্যানেল ব্যবহার করে ইউকে হতে বের হয়ে যেতে চাইলে প্রায় ২০০০ পাউন্ড এজেন্টদের দিতে হয়। কিন্তু আমার হাত শূন্য বিধায় আমি যেতে পারছি না।
উল্লেখ্য যে এই সপ্তাহের শুরুতে, হোম অফিস আশ্রয় আবাসনের ব্যয় নির্বাহের জন্য সরকারের কাছে ২.৬ বিলিয়ন পাউন্ড অনুমোদনের জন্য অনুরোধ করেছিল। তাছাড়া গত বছর অভিবাসীদের হোটেলে রাখার জন্য সরকার প্রতিদিন প্রায় ৮ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। গত গ্রীষ্মে সরকারী পরিসংখ্যান জানিয়েছে ৫০,০০০ এরও বেশি লোককে হোটেল কক্ষে রাখা হয়েছিল। বর্তমানে সরকার ব্যয় সংকোচনের জন্য হোটেল বরাদ্দ বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
যুক্তরাজ্য সরকারের স্বরাষ্ট্র সচিব জেমস ক্লিভারলিকে “কন্টিনজেন্সি ফান্ড অ্যাডভান্স” একটি লিখিত বিবৃতি দিয়ে অনুরোধ জানিয়েছিল, “আশ্রয় প্রার্থীদের আবাসনের ব্যবস্থার জন্য জরুরি ফান্ড প্রয়োজন। যা আশ্রয়প্রার্থীদের আবাসন পরিষেবা সরবরাহে সক্ষম হবে”।
লেবার পার্টি সরকারের আশ্রয়প্রার্থী নিয়ে পরিকল্পনাকে নিয়ে সমালোচনা করেছে। ছায়া স্বরাষ্ট্রসচিব ইয়ভেট কুপার বলেন, সরকার নিজেদের হাস্যকর অবস্থায় নিয়ে গিয়েছে। করদাতাদের অর্থ সঠিক পরিকল্পনার অভাবে নষ্ট হচ্ছে। সঠিক পরিকল্পনা না থাকলে আপনি বেশি অর্থ অপচয় করবেন কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হবে না।”
সূত্রঃ ডেইলি মেইল
এম.কে
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪