পাথর লুটে জড়িত রয়েছে বিএনপির কয়েস লোদী, জামায়াতের ফখরুল ইসলামসহ ৪২ জন। দুদকের অনুসন্ধানে এমনই তথ্য বেরিয়ে এসেছে বলে সংবাদ প্রকাশ করেছে জাতীয় দৈনিক সমকাল।
সমকাল এক প্রতিবেদনে জানায়, সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ থেকে সাদাপাথর চুরির সঙ্গে জড়িত স্থানীয় ৪২ জনকে চিহ্নিত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযুক্তদের মধ্যে স্থানীয় বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতারা রয়েছেন। দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান ও অনুসন্ধান চালিয়ে এ তথ্য পেয়েছে।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি ভোলাগঞ্জ থেকে প্রায় ১০ লাখ ঘনফুট পাথর চুরি হয়েছে। এর মধ্যে আড়াই লাখ ঘনফুট সাদাপাথর উদ্ধার করা সম্ভব হলেও, গত এক বছরে সাদাসহ প্রায় ৪০ লাখ ঘনফুট পাথর অবৈধভাবে তুলে নেওয়া হয়েছে। ১০ আগস্ট সাদাপাথর চুরির ঘটনা ধরা পড়লে, ১৩ আগস্ট দুদক সেখানে অভিযান চালায়।
অভিযুক্তদের মধ্যে বিএনপির ২০ নেতাকর্মী রয়েছেন। এদের মধ্যে সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাহাব উদ্দিন, সদস্য হাজি কামাল, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান লাল মিয়া, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন ওরফে দুদু, সিলেট জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক রুবেল আহমেদ বাহার, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মুসতাকিন আহমদ ফরহাদ, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মো. দুলাল মিয়া ওরফে দুলা, যুগ্ম আহ্বায়ক রজন মিয়া, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা যুবদল নেতা জসিম উদ্দিন, সাজন মিয়া, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির কর্মী জাকির হোসেন, সদস্য মোজাফর আলী, মানিক মিয়া, সিলেট জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মকসুদ আহমদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ওরফে শাহপরান, কোষাধ্যক্ষ (বহিষ্কৃত) শাহ আলম ওরফে স্বপন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কাশেম এবং পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমজাদ বক্স।
আওয়ামী লীগের সাত নেতাকর্মীর মধ্যে রয়েছেন কার্যক্রম নিষিদ্ধ সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের কর্মী বিলাল মিয়া, শাহাবুদ্দিন, গিয়াস উদ্দিন, কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল ওদুদ আলফু, কর্মী মনির মিয়া, হাবিল মিয়া ও সাইদুর রহমান।
জামায়াতের দুই নেতা সিলেট মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. ফকরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন।
এনসিপির দুই নেতা সিলেট জেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রধান সমন্বয়কারী নাজিম উদ্দিন ও মহানগর প্রধান সমন্বয়কারী আবু সাদেক মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম চৌধুরী।
এছাড়া অনুসন্ধানে আরও ১১ জন স্থানীয় ব্যক্তি ভোলাগঞ্জের আনর আলী, উসমান খাঁ, ইকবাল হোসেন আরিফ, দেলোয়ার হোসেন জীবন, আরজান মিয়া, মো. জাকির, আলী আকবর, আলী আব্বাস, মো. জুয়েল, আলমগীর আলম ও মুকাররিম আহমেদ চিহ্নিত হয়েছেন।
দুদক জানিয়েছে, এ ঘটনায় খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো, স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সদস্যদের কর্তব্যে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেছে। দুদকের মহাপরিচালক ও মুখপাত্র মো. আক্তার হোসেন বলেছেন, এনফোর্সমেন্ট টিম পাথর উত্তোলনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যাপক ক্ষতিসাধনের অভিযোগে দ্রুত কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করবে। এর ভিত্তিতে কমিশন পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেবে।
সূত্রঃ সমকাল
এম.কে
১৯ আগস্ট ২০২৫