TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

বিজয় দিবস কেন্দ্র করে দেশে ফিরতে পারেন তারেক রহমান, প্রস্তুতি জোরদার

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার প্রস্তুতি এখন শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে। তিনি দেশে এলে কোথায় অবস্থান করবেন এবং কোথায় রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন—এসব বিষয় প্রায় নিশ্চিত করা হয়েছে। তার ফেরাকে কেন্দ্র করে দলীয়ভাবে BNP নানা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে, পাশাপাশি নিরাপত্তা ইস্যুতেও দলের একটি প্রতিনিধিদল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেছে।
কৌশলগত কারণে তারেক রহমান কিংবা বিএনপি এখনো তার ফেরার নির্দিষ্ট দিন-তারিখ প্রকাশ করছে না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে একাধিক সূত্র জানিয়েছেন, বিজয় দিবসকে সামনে রেখে তিনি দেশে ফেরার সম্ভাবনা বেশি।
তার আগমন উপলক্ষে ব্যাপক উচ্ছ্বাস তৈরি হতে পারে—এমন অনুমান থেকেই নিরাপত্তা, ভেন্যু এবং অন্যান্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বড় জনসমাগম করা হবে কি না, সে সিদ্ধান্তও তারেক রহমান নিজেই নেবেন বলে দলীয় সূত্র জানাচ্ছে। বিএনপির শীর্ষ দুই নেতা জানিয়েছেন, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন তফসিল ঘোষণা হওয়ার কথা, আর তার আগে কিংবা তফসিলের পরপরই তিনি ফিরবেন কি না, তা নিয়ে দলের ভেতরেই আলোচনা চলছে।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজেই জানেন কবে ফিরবেন, তবে দল সবসময় তার আগমনকে সামনে রেখে প্রস্তুত আছে।
দেশে ফিরে তারেক রহমান গুলশান-২ এভিনিউ রোডের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে ওঠতে পারেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। বাড়িটি নতুন করে সাজানো হচ্ছে, স্থাপন করা হয়েছে সিসিটিভি, নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হয়েছে সিএসএফ। এছাড়া ধানমণ্ডির ৫ নম্বর সড়কের ‘মাহবুব ভবন’-এ থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। বাড়িটি তার শ্বশুর, সাবেক নৌবাহিনী প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খানের বাসভবন।
সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার গুলশানের ১৯৬ নম্বর বাড়ির নামজারি সম্পন্ন করে কাগজপত্র বেগম খালেদা জিয়ার কাছে হস্তান্তর করেছে। ১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমানের শাহাদাতের পর সরকার খালেদা জিয়াকে এ বাড়ি বরাদ্দ দিয়েছিল। এখন এটিকে তারেক রহমানের থাকার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে তারেক রহমান রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে। তার বসার কক্ষটি নতুন করে প্রস্তুত করা হচ্ছে।
নির্বাচন সামনে রেখে দুইটি বুলেটপ্রুফ গাড়ি কেনার প্রক্রিয়াও চলছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নিরাপত্তায় ব্যবহারের জন্য একটি বুলেটপ্রুফ বাস ও একটি বুলেটপ্রুফ গাড়ি কেনার অনুমতি দিয়েছে। পাশাপাশি দলের পক্ষ থেকে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের জন্যও আবেদন করা হয়েছে।
বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব হুমায়ুন কবির বলেছেন, এখনো তার দেশে ফেরার দিন ঠিক হয়নি, তবে নির্বাচনে তার নেতৃত্বেই দল অংশ নেবে। তাই তিনি খুব শিগগিরই ফিরবেন বলে মনে করা হচ্ছে। নিরাপত্তার সর্বোচ্চ দায়িত্ব রাষ্ট্রকেই নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
২০১৮ সালে খালেদা জিয়া কারাগারে গেলে তারেক রহমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন। এ বছরের গণ-অভ্যুত্থানের পর তার বিরুদ্ধে থাকা সব মামলা বাতিল হয়। প্রায় ১৭ বছর লন্ডনে অবস্থানের পর এখন তিনি দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ২০০৭ সালে গ্রেপ্তার, কারাগারে নির্যাতন, ২০০৮ সালে জামিন ও পরে লন্ডনে চিকিৎসার জন্য যাত্রা—এর পর থেকেই তিনি সেখান থেকে বিএনপি পরিচালনা করে আসছেন।
তার দেশে ফেরার জন্য পাসপোর্ট বা ট্রাভেল ডকুমেন্ট প্রয়োজন হলে সরকার সরবরাহ করবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
তারেক রহমানের ফেরাকে কেন্দ্র করে জাতীয় রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, আর বিএনপির ভেতরেও উচ্ছ্বাস ও প্রস্তুতি জোরদার হচ্ছে।
সূত্রঃ জনতার চোখ
এম.কে

আরো পড়ুন

অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ নির্ধারণ হচ্ছে, বাতিল করা যাবে না

পাসপোর্ট করতে বেনজীরের নজিরবিহীন জালিয়াতি, মিথ্যা পরিচয়ে বিশ্বভ্রমণ

৩১ ঘণ্টায় ৪ বার ভূমিকম্প, কী বার্তা দিচ্ছে?