বিদেশি অপরাধীদের যুক্তরাজ্য থেকে দ্রুত ফেরত পাঠাতে নতুন কৌশল হাতে নিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। ফ্যাসিলিটেটেড রিটার্ন স্কিম-এর আওতায় প্রত্যেক অপরাধীকে সর্বোচ্চ £2,000 পর্যন্ত নগদ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে।
সম্প্রতি আইটিভি নিউজের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, প্রায় ৫০ জন বিদেশি অপরাধীকে রোমানিয়ায় ফেরত পাঠানো হয়। প্রত্যেককে বিমানে ওঠার আগে প্রি-লোডেড ব্যাংক কার্ড দেওয়া হয়, যাতে সর্বোচ্চ £2,000 পর্যন্ত অর্থ ছিল। পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় প্রতিটি যাত্রীকে একাধিক নিরাপত্তাকর্মীর কড়া নজরদারিতে বিমানে তোলা হয়।
হোম অফিসের হিসাবে, বর্তমানে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের কারাগারে ১১ হাজার বিদেশি অপরাধী বন্দি, যা মোট বন্দীর আট ভাগের এক ভাগ। এদের জন্য বছরে প্রায় £600 মিলিয়ন খরচ হয়। সরকারের দাবি, নগদ প্রণোদনার মাধ্যমে স্বেচ্ছায় ফেরত গেলে তা করদাতাদের জন্য অনেক সাশ্রয়ী।
নতুন আইনে অপরাধীদের সাজা ভোগের মাত্র ৩০ শতাংশ পার হলেই তাদের ফেরত পাঠানো যাবে। এই পরিবর্তন কার্যকর করেছেন হোম সেক্রেটারি শবানা মাহমুদ। তিনি স্বীকার করেন, “এটি দেখাতে ভালো নাও লাগতে পারে, তবে বাস্তবে এটি সস্তা ও কার্যকর।”
এই প্রকল্পে কারাগারে থাকা অবস্থায় ফেরত যেতে রাজি হলে অপরাধী পাবেন £1,500, একই অঙ্কের অর্থ পাবে যোগ্য পরিবারও। সাজা শেষে আবেদন করলে দেওয়া হবে £750। বিশেষ পরিস্থিতি যেমন মানসিক অসুস্থতা, শারীরিক অক্ষমতা বা গর্ভাবস্থার জন্য বাড়তি £500 পর্যন্ত সহায়তা দেওয়া হতে পারে।
তবে হোম অফিসের নির্দেশনায় বলা আছে, যদি কোনো অপরাধীর ফেরত প্রণোদনা জনমনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, তবে তাকে এ সুবিধা থেকে বাদ দেওয়া হবে। হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ, শিশু যৌন অপরাধ, সন্ত্রাসবাদ বা মানবপাচারের মতো অপরাধের ক্ষেত্রে বিশেষ বিধিনিষেধ থাকছে।
শবানা মাহমুদ জানিয়েছেন, এই উদ্যোগ কেবল ফেরত পাঠানোর সংখ্যাই বাড়াবে না, একই সঙ্গে অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধে প্রতিবন্ধক হিসেবেও কাজ করবে। তিনি বলেন, “আমরা সংখ্যা বাড়াবো। ফ্লাইট শুরু হয়েছে, আরও হবে। অবৈধভাবে আসার চিন্তাই অনেকের মধ্যে ভীতি তৈরি করবে।”
২০২৪ সালে যুক্তরাজ্য থেকে প্রায় ৩৪ হাজার মানুষ ফেরত পাঠানো হয়েছে—২০১৭ সালের পর যা সর্বোচ্চ। সরকারের আশা, নতুন প্রকল্প চালু থাকলে এ সংখ্যা আরও বাড়বে।
সূত্রঃ দ্য টেলিগ্রাফ
এম.কে
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫