সুইজারল্যান্ড নভেম্বর মাস থেকে বিশ্বের সর্বোচ্চ ন্যূনতম মাসিক বেতন প্রবর্তন করছে। সেপ্টেম্বরের শেষে একটি গণভোটের পরে এই নিয়ম চালু হয়।
বিশ্বের অন্যান্য যেকোনো দেশের তুলনায় সুইজারল্যান্ড অনেক বেশি আকর্ষণীয় এবং সমৃদ্ধ দেশ। কিন্তু এই ধনী দেশেও স্বল্প আয়ের লোকেরা অনেক বেশি ব্যয় করতে বাধ্য হয়। তাই তাদের ন্যূনতম বেতন স্কেল চালু করতে হয়েছে।
ন্যূনতম বেতন ৪ হাজার ফ্র্যাঙ্ক অর্থাৎ বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকার কাছাকাছি। অনেকের কাছে এই অর্থ অনেক বেশি বলে মনে হতে পারে। কিন্তু এ দেশে জীবনযাপন প্রচুর ব্যয়বহুল। ৫ হাজার ফ্র্যাঙ্কের নিচে যাদের মাসিক আয় তারা মাস শেষে কোন মুদ্রাই জমাতে পারেন না
পেনশন, বেকারত্ব বিমা ও অন্যান্য বাধ্যতামূলক কর বেতন থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কেটে নেওয়া হয় এখানে। বাড়িভাড়ার জন্য মোট আয়ের ২০ শতাংশ, পরিবহন ব্যয় গড়ে ৮ শতাংশ, এছাড়া খাদ্য, পানীয়, সন্তানসন্ততিদের দেখাশোনা, অবসরকালীন ছুটির খরচের সঙ্গে আছে চিকিৎসার খরচ। সব যোগ করলে দেখা যায় যাদের বেতন ৫ হাজার ফ্র্যাঙ্কের নিচে তারা মাস শেষে কোন মুদ্রাই জমাতে পারেন না।
এমনকি লরার মতো কিছু স্বেচ্ছাসেবক জেনেভার জীবনযাত্রা অনেক ব্যয়সাধ্য বলে মনে করেন। তিনি একজন নার্স। তার বেতন ৪ হাজার ফ্র্যাঙ্ক কিন্তু তার পরেও নিজের বেতনের টাকায় শহরে বাড়ি কিনতে পারছেন না। তিনি বলেন, আমি খুব ছোট একটি ঘরে পরিবারের সাথে থাকি,যদিও আমার বয়স ২৬ হয়ে গেছে।
গত মার্চ মাসে সুইজারল্যান্ড যখন লকডাউনে গিয়েছিল তখন জেনেভায় খাদ্য ব্যাংকগুলিতে মানুষের লাইনের ছবি শিরোনাম হয়েছিল।অনেক সময়ই দেখা গেছে ফুড ব্যাংকের স্বেচ্ছাসেবীরাও খাবারের জন্য লড়াই করছে।
কোভিড মহামারির কারণে অনেক ব্যবসাই এখন হুমকির মুখে। এমন অবস্থায় ব্যবসায়িরা কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি করলে আরো বড় ক্ষতির মুখমুখি হবে বলে জানিয়েছেন অনেকে।
জেনেভার ন্যূনতম মজুরি আইনের আওতায় এসেছে কারণ জেনেভা নাগরিকরা এটিকে “জনগণের প্রয়োজন” হিসাবে প্রস্তাব করেছেন। তারা এই ইস্যুতে গণভোট আহ্বানের জন্য যথেষ্ট স্বাক্ষর জোগাড় করেছে এবং সেপ্টেম্বর মাসে ভোটাররা হ্যাঁ বলেছেন। সুইজারল্যান্ডের প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র ব্যবস্থার অর্থ ভোটারদের ভোটই চূড়ান্ত। তাই ন্যূনতম মজুরি এখন বাধ্যতামূলক।
সূত্র: বিবিসি
২ নভেম্বর ২০২০
এসএফ