যুক্তরাজ্যে বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) থেকে কার্যকর হয়েছে পূর্ণমাত্রায় লকডাউন। প্রধানমন্ত্রী বোরিস জনসন ঘোষণা দিয়েছেন এবারের লকডাউনটি ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকবে, কিন্তু আশঙ্কা রয়েছে এটি আরও বাড়তে পারে।
আগামী এই একমাস ব্রিটিশ নাগরিকদের যেসব বিধিনিষেধ ও আইন মেনে চলার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কড়া নির্দেশ রয়েছে এবং যেসব নিয়ম চালু থাকবে:
বাড়িতে থাকুন:
জরুরি কাজ ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হও্যা যাবে না। তবে অফিসের কাজে বা স্বেচ্ছাসেবামুলক কাজে বের হতে পারবেন। খাবার, পানীয় বা ওষুধ সংগ্রহের জন্য বাড়ি থেকে বের হওয়া যাবে। বিভিন্ন আইনি বাধ্যবাধকতাগুলো পূরণ করতে বা সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়, ভাড়া দেয়া-নেয়া করতে পারবেন। শিক্ষা এবং চাইল্ড কেয়ারের কাজে বের হওয়া যাবে। বিপদাপন্ন বন্ধু বা আত্মীয়কে সাহায্য করতে যেতে পারবেন।
উপাসনালয়গুলোতে কেবল ব্যক্তিগত প্রার্থনার উদ্দেশ্যে যাওয়া যেতে পারে। মৃত ব্যক্তিকে দাফনের উদ্দেশ্যে যাও্যা যাবে।
সামাজিক দূরত্ব
সামাজিক দেখা সাক্ষাতের ব্যাপারে নিষেধ রয়েছে। আপনি কেবল যাদের সঙ্গে বসবাস করছেন এবং আপনার সাপোর্ট বাবল অথবা চাইল্ড কেয়ার বাবলে থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। বাইরে গেলে অন্য ব্যক্তিদের থেকে ২ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। বাইরে একজনের বেশি মানুষের সঙ্গে সাক্ষাত করতে পারবেন না।
জনসমাগম
নির্দিষ্ট কিছু কারণ ছাড়া গণজামায়েত নিষিদ্ধ। অফিসের কাজ, স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ, শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ নিতে একসঙ্গে বেশি লোক জামায়েত হতে পারবেন। সাপোর্ট গ্রুপগুলোতে একসঙ্গে ১৫ জন পর্যন্ত লোক কর্মকাণদ চালাতে পারবেন।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
সামাজিক যোগাযোগ প্রতিরোধ করার জন্য সরকার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে তাদের কর্মকাণ্ড বা সেবা বন্ধ রাখতে বলেছে এবং কিছু প্রতিষ্ঠান সীমিত আকারে খোলা থাকতে পারে।
অদরকারি পণ্যের দোকান, পোশাকের শো-রুম, হার্ডওয়্যার বা ডেকোরেশন সামগ্রি, গাড়ির শো-রুম, মোবাইল ফোনের দোকান এগুলো অগ্রীম অর্ডারের ভিত্তিতে ডেলিভারি সেবা চালু রাখতে পারবে।
রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে ও পাবের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে টেকওয়ে সার্ভিস বা ডেলিভারি সার্ভিস নেয়া যাবে। তবে সেটা অবশ্যই রাত ১০টার আগে। অ্যালকহোলের বিষয়েও একই নিয়ম থাকবে।
হোটেল, হোস্টেল, গেস্ট হাউজ এবং ক্যাম্পসাইটগুলো কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতি ব্যতীত যেমন এগুলো কেউ বাসস্থান হিসেবে ব্যবহার করছেন বা বড়ি ফেরা কোনো উপায় নেই, এরকম পরিস্থিতে সেবা দিতে পারবে।
অবসর বিনোদন বা খেলাধুলার সুবিধাগুলো যেমন জিম, সুইমিংপুল, টেনিস, বাস্কেটবল, গলফ খেলার কোর্ট, ফিটনেস বা নাচের স্টুডিও, ড্রাইভিং এবং শুটিং রেঞ্জ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
থিয়েটার, কনসার্ট হল, সিনেমা, জাদুঘর, ক্যাসিনো, স্কেটিং রিং, সার্কাস, চিড়িয়াখানা, বোটানিক্যাল গার্ডেন, থিম পার্কের মতো বিনোদনকেন্দ্রগুলো অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।
সেলুন, পার্লার, স্পা, ট্যাটু, মেসেজ ইত্যাদি সেবা বন্ধ থাকবে। অন্যের বাড়ি গিয়েও তা সরবরাহ করা যাবে না।
কমিউনিটি সেন্টার এবং হলগুলো সীমিত সংখ্যক লোক প্রবেশ করতে পারবেন। লাইব্রেরি এবং আইটি পরিষেবাগুলো উন্মুক্ত থাকতে পারে। তাছাড়া, চাইল্ড কেয়ার, ব্লাড ডোনেশন, ফুড ব্যাংক, মেডিকেল ট্রিটমেন্ট, পেশাদারি ছবি তোলা বা ভিডিও ধারণের কাজ করা যেতে পারে।
যেসব প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে:
১. প্রয়োজনীয় খাবারের দোকান, সুপারমার্কেট, ফার্মেসি, বাগান, হার্ডওয়্যার স্টোর, বিল্ডিং মার্চেন্ট, অফ-লাইসেন্স।
২. পেট্রোল পাম্প, গাড়ি মেরামত, এটিএম সেবা, সাইকেলের দোকান, ট্যাক্সি বা গাড়ি ভাড়ার প্রতিষ্ঠান
৩. ব্যাংক, বিল্ডিং সোসাইটি, পোস্ট অফিস, ঋণ সরবরাহকারী এবং মানি ট্রান্সফার।
৪. মৃত ব্যক্তির দাফন কার্যক্রম পরিচালনাকারী সেবা।
৫. লন্ড্রি বা ড্রাই ক্লিনার
৬. স্বাস্থ্য ও ডেন্টাল সার্ভিস
৭. পোষা প্রাণির দোকান এবং প্রাণি চিকিৎসাকেন্দ্র
৮. কৃষি সরবরাহ
৯. স্টরেজ এবং ডেলিভারি সুবিধা
১০. গাড়ি পার্কিং, পাবলিক টয়লেট, মোটরওয়ে
১১. খেলার মাঠ
০৫ নভেম্বর ২০২০
এনএইচ