ইসলামপন্থী আন্দোলন ‘মুসলিম ব্রাদারহুড’ ফ্রান্সে তাদের প্রভাব বিস্তার করে চলছে। এই আন্দোলনের চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে দেশটিকে শরিয়া আইন দ্বারা পরিচালিত খিলাফতের অংশ করা।ফ্রান্সেও ইসলামের জয়ের পথ তৈরি হয়েছে বলে উঠেছে এসে এক নতুন প্রতিবেদনে। ফ্রান্সে ইসলামপন্থি আন্দোলন কিভাবে দেশটির ভবিষ্যৎ বদলে দেওয়ার চেষ্টা করছে তা তুলে ধরা হয়।
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল ডিরেক্টরেট ফর টেরিটোরিয়াল ইন্টেলিজেন্সের প্রধান বার্ট্রান্ড চামোলাউড চলতি সপ্তাহে ফরাসি দৈনিক লে মঁদকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, মুসলিম ব্রাদারহুড একটি সাংগঠনিক জাল তৈরি করছে। প্রতিদিন ধীরগতিতে কিন্তু পরিকল্পিতভাবে দেশটির ভিতরে প্রবেশ করছে। এটি একটি খিলাফতের সূচনা।
প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, মুসলিম ব্রাদারহুড ফ্রান্সে বিস্তার করার জন্য একটি শান্তিপূর্ণ কৌশল প্রয়োগ করছে। ধর্মীয় উপসানালয় এবং সামাজিক সংস্থাগুলোর মাধ্যমে ধীরে ধীরে সমাজে প্রবেশ করে নিজেদের ধারণা ছড়িয়ে দেয়। তবে কখনো কোনো সহিংসতা ছড়ায় না। ফ্রান্সে বিভিন্ন মসজিদে লাখেরও বেশি মুসলিম এই ধারণাগুলো অনুসরণ করছে। তাদের লক্ষ্য দেশের প্রতিটি ক্ষেত্র শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া এই তিনটি ক্ষেত্রের মধ্য দিয়েই নিজেদের পরিচয় তৈরি করা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ইসলামপন্থী আন্দোলনের প্রসার প্রতিদিনই বাড়ছে। একটি সংগঠন ছিল সিসিআইএফ। এই সংগঠন মুসলমানদের বিরুদ্ধে বৈষম্য মোকাবিলা করার জন্য কাজ করেছিল। তবে ২০২০ সালে এই সংগঠনটি ফ্রান্স সরকার বন্ধ করে দেয়। এতেই বোঝা যায়, ফ্রান্স সরকার চায় না ইসলামপন্থী চিন্তাধারার প্রসার ঘটুক। ইসলামপন্থী নেতারা নিজেদের শান্তিপূর্ণ কৌশলকেই শক্তিশালী অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।
মুসলিম ব্রাদারহুডের ফ্রান্স শাখাও, অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোর শাখার মতো, একটি ইসলামি সরকার প্রতিষ্ঠা করা এবং বিদ্যমান ধর্মনিরপেক্ষ আইন প্রতিস্থাপন করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে। তবে ইউরোপ, বিশেষ করে ফ্রান্সে, মুসলিম ব্রাদারহুড শান্তিপূর্ণ পদ্ধতি ব্যবহার করে এবং এমন কোনো লক্ষ্য অনুসরণ করার কথা অস্বীকার করে।
সংগঠনটি ঘোষিতভাবে মুসলমানদের “পুনরায় ইসলামিকরণ” করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে এবং এমন দেশে, যেখানে মুসলমানরা সংখ্যালঘু, তাদের ধর্মীয়ভাবে কীভাবে আচরণ করা উচিত সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করে। সংগঠনটি মুসলমানদের ইসলামিক বিশ্বাস রক্ষা এবং তা মেনে চলার পথ খুঁজতে উৎসাহিত করে।
এছাড়াও, এই সংগঠনটি অন্যান্য রাজনৈতিক ইস্যুতে, বিশেষ করে ফিলিস্তিন, ইরাক, বসনিয়া এবং আফগানিস্তান নিয়ে, মুসলমানদের সক্রিয় করে।
সূত্রঃ দৈনিক লে মঁদ
এম.কে
২৯ ডিসেম্বর ২০২৪