TV3 BANGLA
বাংলাদেশযুক্তরাজ্য (UK)

ব্রিটিশ নাগরিকত্বের আড়ালে টিউলিপ সিদ্দিকের বাংলাদেশে বাণিজ্যিক সম্পদ গোপনের অভিযোগ

ব্রিটিশ নাগরিকত্বের আড়ালে বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টার এবং ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে। আয়কর নথি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০০৬ সালে তার মোট সম্পদ ছিল ৪ লাখ ৪০ হাজার ৫০০ টাকা, যা ২০১৫ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৩৬ লাখ ৪৬ হাজার ৫০৫ টাকায়। প্রতি বছরই ব্যবসা থেকে আয় বৃদ্ধির তথ্য দেখানো হলেও ব্যবসার ধরন সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কিছু উল্লেখ করা হয়নি।

গত ৩ জুন রাজধানীর পুরানা পল্টনে কর অঞ্চল-৬ অফিসে অভিযান চালিয়ে টিউলিপের ১৩ বছরের আয়কর নথি জব্দ করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আদালতের নির্দেশে দুদকের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়। এতে ২০০৬-০৭ থেকে ২০১৮-১৯ করবর্ষ পর্যন্ত সব নথি জব্দ করা হয়।

জব্দ করা নথিতে টিউলিপ সিদ্দিকের নাম কখনো রিজওয়ানা সিদ্দিক, কখনো রিজওয়ানা সিদ্দিক টিউলিপ, আবার কোথাও টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক হিসেবে লেখা হয়েছে। সইগুলোর মধ্যেও অসঙ্গতি পাওয়া গেছে। বাবার নাম হিসেবে সব জায়গায় শফিক আহমেদ সিদ্দিক থাকলেও মায়ের নাম কখনো রেহানা সিদ্দিক, আবার কখনো শেখ রেহানা লেখা হয়েছে। যদিও জন্মতারিখ ও ছবিতে টিউলিপের পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে।

আয়কর নথি বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০০৬ সালে ব্যবসা থেকে আয় দেখানো হয়েছিল ১ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা এবং বাবার কাছ থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া স্বর্ণালংকারের মূল্য ১ লাখ টাকা। ২০১২ সালে তাঁর মোট সম্পদ বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ লাখ ২৪ হাজার টাকা, আর ২০১৩ সালে কৃষি খাত থেকে হঠাৎ ৯ লাখ টাকার আয় দেখান তিনি। একই বছর ব্যবসায় পুঁজি দাঁড়ায় প্রায় ২৪ লাখ টাকা।

২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো নাম পরিবর্তন করে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ব্যবহার করা হয় এবং মায়ের নাম লেখা হয় শেখ রেহানা। ওই বছর নতুন ই-টিআইএন নম্বরও গ্রহণ করেন তিনি। ২০১৫ সালে ব্যবসা থেকে আয় দেখানো হয় ৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, ব্যাংক থেকে লাভ আসে আরও ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা। এ সময় সোনালী ব্যাংকে তাঁর জমা টাকার অঙ্ক দাঁড়ায় ৩১ লাখ ২৩ হাজার ৭৬ টাকা।

তবে দুদকের অনুসন্ধান বলছে, টিউলিপ গুলশানে ফ্ল্যাট থাকার বিষয়টি নথিতে গোপন করেছেন। ২০০২ সালের সাফ কবালা দলিল অনুযায়ী ফ্ল্যাটটির মালিক তিনি হলেও আয়কর বিবরণীতে তা উল্লেখ করা হয়নি। পরবর্তীতে ২০১৫-১৬ করবর্ষে ফ্ল্যাটটি ছোট বোন আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীকে হিবা করেন।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ সুলতান মাহমুদ বলেন, যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এই এমপি বাংলাদেশি পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র গ্রহণ করে ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন। ফলে তিনি প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা ও সম্পদ গোপনের অভিযোগে তদন্তাধীন রয়েছেন।

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন

এম.কে
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্যে শ্রমিকের মজুরি রেকর্ড বৃদ্ধি

ব্রিটেনে খাদ্য রেটিং নিয়ে চলছে গ্রাহকদের সাথে প্রতারণাঃ বিবিসি

গুম হওয়া বিএনপি নেতার ভাইকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ, পরে মুক্ত