21 C
London
July 5, 2025
TV3 BANGLA
আন্তর্জাতিকযুক্তরাজ্য (UK)

ব্রিটিশ রাজনীতিতে ফিলিস্তিনপন্থী পাঁচ স্বতন্ত্র এমপির উত্থানঃ পুরনো ব্যবস্থায় বড় চ্যালেঞ্জ

যুক্তরাজ্যের সাম্প্রতিক সাধারণ নির্বাচনে ফিলিস্তিনপন্থী পাঁচ স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিজয় এক নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা তৈরি করেছে। মাত্র এক বছরের মধ্যেই এই এমপিরা পার্লামেন্টে ‘ইনডিপেনডেন্ট অ্যালায়েন্স’ নামে জোট গঠন করে তাদের অবস্থান দৃঢ় করেছেন এবং সরকারের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতিতে স্পষ্ট প্রভাব রাখতে শুরু করেছেন।

 

নির্বাচনের রাতে লেবার পার্টি বড় জয় পেলেও সবচেয়ে বড় চমক ছিল এই পাঁচজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিজয়। প্রধানত গাজা যুদ্ধ নিয়ে লেবার পার্টির অবস্থানের বিরোধিতা থেকেই তাদের জনপ্রিয়তা তৈরি হয়। মুসলিম অধ্যুষিত আসনগুলোতে লেবারের ভোট ১৫ থেকে ৪৫ শতাংশ কমে যায়, যার অনেকটাই এই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দিকে চলে যায়।

লেস্টার সাউথে শওকত আদম লেবারের শ্যাডো মন্ত্রী জনাথন অ্যাশওয়ার্থকে পরাজিত করেন। জয়লাভের পর তিনি বলেন, এই বিজয় গাজার মানুষের জন্য উৎসর্গিত। ব্ল্যাকবার্নে আইনজীবী আদনান হুসেইন লেবারের ৬৯ বছরের আধিপত্য ভেঙে জিতে যান। গাজা ইস্যু ও স্থানীয় দরিদ্রতা তাঁর প্রচারের মূল বিষয় ছিল।

ডিউসবুরি ও ব্যাটলি আসনে প্রকৌশলী ইকবাল মোহাম্মদ দ্বিগুণ ভোটে জয় পান। ২০২৩ সালের গাজা যুদ্ধ ইস্যুতে লেবার ছাড়েন তিনি। বার্মিংহাম পেরি বার আসনে ব্যারিস্টার আইয়ুব খান লিবারেল ডেমোক্র্যাট দল ত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জয়ী হন। গাজা ছাড়াও জীবনযাত্রার ব্যয় ও বেকারত্ব তাঁর প্রচারের মূল ইস্যু ছিল।

তবে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ও পরিচিত মুখ ছিলেন জেরেমি করবিন। লেবার পার্টি থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পরেও নিজের পুরোনো আসনে জয়ী হন তিনি। তাঁর ভাষায়, “এই নির্বাচনে ব্যালটপেপারে ছিল ফিলিস্তিন।”

নির্বাচনের পর এই পাঁচজন একত্রে দেখা করেন এবং একসঙ্গে কাজ করার সংকল্প জানান। এরপর ‘ইনডিপেনডেন্ট অ্যালায়েন্স’ গঠিত হয়, যার সদস্য সংখ্যা রিফর্ম ইউকে পার্টির সমান। তাঁরা গ্রিন পার্টি, লিবারেল ডেমোক্র্যাট ও লেবারের পেছনের কাতারের কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন।

লেবার এমপি জারা সুলতানা সম্প্রতি পদত্যাগ করে করবিনের সঙ্গে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। এই দলে ১২ জন এমপি থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে সংসদে একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি হবে।

এই রাজনৈতিক জোট শুধু গাজার ন্যায়বিচার নয়, বরং টেকসই উন্নয়ন, শান্তি এবং অর্থনৈতিক ন্যায্যতার দাবি তুলে ধরছে। লেবার ও কনজারভেটিভদের নিয়ে গঠিত পুরোনো দ্বিদলীয় ব্যবস্থায় এটি এক বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এক বছর আগে যারা ভাবতেন স্বতন্ত্ররা রাজনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারবেন না, আজ তারাই বিস্মিত। ফিলিস্তিনপন্থী এই স্বতন্ত্র এমপিদের উত্থান ব্রিটিশ রাজনীতির কাঠামোই পাল্টে দিচ্ছে।

সূত্রঃ মিডল ইস্ট আই

এম.কে
০৫ জুলাই ২০২৫

আরো পড়ুন

টিউলিপ সিদ্দিকের স্থলাভিষিক্ত হলেন এমা রেনল্ডস

সুখ নেই যুক্তরাজ্যে- একটি গবেষণা প্রতিবেদনে রিপোর্ট

যুক্তরাষ্ট্রের ১০ ফুল-ফান্ড স্কলারশিপ