মুসলিম হওয়ার কারণে যুক্তরাজ্যে একজন নারী টোরি এমপির মন্ত্রিত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
কাশ্মিরী বংশোদ্ভূত এই ব্রিটিশ এমপি অভিযোগ করেছেন, শুধুমাত্র মুসলিম হওয়ার কারণে তার মন্ত্রিত্ব কেড়ে নিয়েছে বরিস জনসনের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন সরকার।
রোববার (২৩ জানুয়ারি) বিবিসিসহ একাধিক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ব্রিটিশ ওই নারী এমপির অভিযোগ, তার ইসলাম চর্চা ও বিশ্বাস মন্ত্রীসভার অন্য সহকর্মীদের মধ্যে অস্বস্তির সৃষ্টি করেছিল বলে তাকে জানানো হয়।
এদিকে তার এই অভিযোগটি আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপনের আহ্বান জানিয়েছেন ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার ডমিনিক রাব।
বিবিসি বলছে, কেবলমাত্র ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে মন্ত্রিত্ব হারানো ব্রিটেনের মুসলিম ওই নারী এমপির নাম নুসরাত গনি। ৪৯ বছর বয়সী এই আইনপ্রণেতা যুক্তরাজ্যের জুনিয়র পরিবহন মন্ত্রী ছিলেন এবং ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
তাকে ২০১৮ সালে পরিবহন বিভাগের জুনিয়র মন্ত্রী পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সরকার মন্ত্রীসভায় ছোট রদবদল আনেন। সেই সময় তিনি তার পদ হারান।
মন্ত্রিত্ব হারানোর পর ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হুইপ তাকে জানিয়েছিলেন যে, তার মুসলিম পরিচয়ই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়ার পেছনে মূল কারণ ছিলো।
এদিকে নুসরাত গনির এই অভিযোগের পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ডাউনিং স্ট্রিটের দপ্তর থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। কিন্তু, ব্রিটিশ সরকারের চিফ হুইপ মার্ক স্পেন্সার জানিয়েছেন, নুসরাত গনি তার সম্মানহানির জন্যই এই অভিযোগ এনেছেন।
ব্রিটেনের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম নারী মন্ত্রী ছিলেন নুসরাত গনি। তিনি জানান, ‘ডাউনিং স্ট্রিটের এক রদবদল সভায় আমার মুসলিম হওয়ার বিষয়টি উত্থাপন করা হয় এবং সেখানে একজন মুসলিম নারী মন্ত্রী হবে এটা নাকি সহকর্মীদের মধ্যে অস্বস্তি সৃষ্টি করেছিল’।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি এটি বলবো না যে, এটি (মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া) দলের প্রতি আমার বিশ্বাসকে নাড়া দেয়নি। এমনকি দলের এমন আচরণে আমি এমপি হিসেবে আমার দায়িত্ব চালিয়ে যাবো কি না সেটিও একসময় বিবেচনা করতে বাধ্য হই।’
তবে মার্ক স্পেন্সার জানিয়েছেন, গত বছরের মার্চে বিষয়টি প্রথম উত্থাপন করেছিলেন নুসরাত গনি। তবে বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক পন্থায় অভ্যন্তরীণভাবে তদন্তের আওতায় নিতে তিনি (নুসরাত) অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।
যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টি এর আগে ইসলামোফোবিয়া বা ইসলামভীতির অভিযোগের সম্মুখীন হয়েছিল। এছাড়া গত বছরের মে মাসে একটি প্রতিবেদনে মুসলিমদের বিরুদ্ধে বৈষম্যের অভিযোগের মোকাবিলা করা নিয়ে দলটির সমালোচনাও করা হয়েছিল।
২৩ জানুয়ারি ২০২২
এনএইচ