বিশ্ব গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ভারতের পর এবার পাকিস্তানের কাছে তেল বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুতিন সরকার। ইসলামাবাদকে কম দামে অপরিশোধিত তেল রফতানির সিদ্ধান্ত নিল রাশিয়া। ভারতের মতো ছাড়েই আগামী মাসে এই তেল ইসলামাবাদ পেতে চলেছে বলে জানিয়েছেন পাক পেট্রোলিয়াম প্রতিমন্ত্রী মুসাদিক মালিক। বর্তমানে ভারত ছাড়া অন্যান্য দেশকে যে ছাড়ে রাশিয়া তেল রফতানি করে, সেই দামেই পাওয়া যাবে বলে পাক টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন পাকিস্তানের পেট্রোলিয়াম প্রতিমন্ত্রী।
তবে, দুই দেশের মধ্যে চুক্তির বিষয়টি বিস্তারিত জানাতে অস্বীকার করেছেন পাকিস্তানের পেট্রোলিয়াম প্রতিমন্ত্রী। কয়েকদিন আগে সস্তায় অপরিশোধিত তেল দেওয়া নিয়ে ইসলামবাদ ও মস্কো ঐক্যমতে পৌঁছে বলে জানিয়েছেন পাক মন্ত্রী। চুক্তি অনুযায়ী সেই তেল পাকিস্তানে পৌঁছাতে ২৬ থেকে ২৭ দিন সময় লাগবে বলে গণমাধ্যমে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
এই মুহুর্তে ইরান থেকে তেল কেনার ব্যাপারে কোনো চিন্তাভাবনা নেই বলে পাক টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের পেট্রোলিয়াম প্রতিমন্ত্রী নিশ্চিত করেন। তার আশঙ্কা, ইরান থেকে তেল কিনলে, সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে পারে ইসলামাবাদ। তবে, তেহরান থেকে গ্যাস আমদানির বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মালিক।
প্রসঙ্গত, আর্থিক সংকটে থাকা পাকিস্তানকে কম দামে অপরিশোধিত তেল আমদানি নিয়ে আলোচনা করতে গত বছর নভেম্বর মাসে রাশিয়া সফরে যান মালিক। সেই সময় এ নিয়ে দুই দেশের মন্ত্রী পর্যায়ে একপ্রস্থ আলোচনাও হয়। পরবর্তী কালে এই বছরের শুরুতে রাশিয়ার একটি প্রতিনিধি দল কম দামে তেল বিক্রি নিয়ে আলোচনা করতে পাকিস্তানে আসে।
কয়েকদিন আগে রাশিয়া থেকে কম দামে তেল আমদানি নিয়ে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মালিক। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে সেই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করলেন পাক পেট্রোলিয়াম প্রতিমন্ত্রী। সম্প্রতি, রাশিয়া থেকে কম দামে তেল কেনার ভারতের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছিলেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন রাশিয়া থেকে কম দামে তেল আমদানি নিয়ে তিনি উদ্যোগ নিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন।
কিন্তু সরকারের পতনের সঙ্গে সঙ্গে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয় বলে এক ভিডিও বার্তায় জানান প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তারপরেই পাক মন্ত্রীর এই ঘোষণা বিশেষ ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করছেন পাক ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। কয়েকদিন আগে রাশিয়া থেকে রেকর্ড পরিমাণ ভারতের তেল রফতানির বিষটি প্রকাশ্যে আসে।
মস্কো থেকে চীন ও ভারতের সম্মিলিত তেল আমদানি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যভুক্ত দেশগুলির থেকে বেশ বড় বলে জানা যায়। এবার সেই তালিকায় ঢুকে পড়ল পাকিস্তানও। আর এটাকে আন্তর্জাতিক রাজনীতির নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।