ধূমকেতুর মতো আবির্ভাব হওয়া ঢাকাই চলচ্চিত্রের এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম সালমান শাহ। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি। ক্ষণজন্মা এ তারকা অল্প দিনের ক্যারিয়ারেই জায়গা করে নিয়েছিলেন সব শ্রেণি-পেশার দর্শক হৃদয়ে। স্বল্প সময়ের ক্যারিয়ারে সফলতা পেয়েছিলেন যেমন, একইসঙ্গে আবার অনেক ব্যবসা সফল সিনেমাও উপহার দিয়েছিলেন এ মহানায়ক।
অভিনয় দক্ষতা, স্টাইল ও ফ্যাশন সচেতনতার জন্য দর্শকহৃদয়ে এখনো অবস্থান নায়ক সালমান শাহর। মাত্র ২৫ বছর বেঁচে ছিলেন তিনি। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানী ঢাকার ইস্কাটনে নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়। এ খবর প্রকাশ্যে আসার পর চাঞ্চল্যের শুরু হয় দেশজুড়ে। আর প্রিয় নায়ককে হারানোর বেদনা এখনো কাঁদিয়ে বেড়ায় লাখো ভক্তকে।
শুক্রবার ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহর ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯৬ সালের এই দিনে তিনি পৃথিবী থেকে বিদায় নেন। মৃত্যুর এত বছর পরও তিনি এখনও আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা নিয়ে ভক্তকুলের হৃদয়ে জায়গা করে রেখেছেন।
কিন্তু দীর্ঘ এ সময়েও তার মৃত্যু নিয়ে রয়ে গেছে রহস্য। সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন, এটি মানতে নারাজ তার মা নীলা চৌধুরী। মামলা পুনরুজ্জীবিত করে নতুন করে ছেলে ‘হত্যা’র বিচার চেয়েছেন তিনি।
তার দাবি, তার ছেলে আত্মহত্যা করেনি, আত্মহত্যার কোনো আলামত নেই। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ভারতীয় কাউকে ভাড়া করে সালমান শাহকে হত্যা করিয়েছে। সম্প্রতি লন্ডন থেকে গণমাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছেন নীলা চৌধুরী।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআইয়ের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার জানান, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন। তাকে খুন করা হয়নি। চিত্রনায়িকা শাবনূরের সঙ্গে বেশ ভালো সম্পর্কের কারণে স্ত্রী সামিরার সঙ্গে দাম্পত্য কলহ থেকেই আত্মহত্যা করেছেন এ নায়ক।
এ বিষয়ে নীলা চৌধুরী বলেন, ‘সালমান শাহ আত্মহত্যা করেনি। এ হত্যার বিচার প্রয়োজন। আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে দেশে ফিরিয়ে আনা হোক। আগে একটা মাফিয়ার আন্ডারে ছিলাম। এখন আমরা মুক্ত। আমরা বলতে চাই, আমি কথা বলব।’
সালমান শাহর স্ত্রী সামিরা সম্পর্কে নীলা চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, ‘সামিরা তিনটি বিয়ে করল। সে কেমন তা প্রমাণ হয়ে গেছে। একটি ঘরে থাকতে পারেনি সে। তার বাবাও অনেক কিছু করেছে। ইদানীং তাদের দেখা যাচ্ছে না। তার মা সালমান শাহ হত্যা মামলার আসামি। অথচ একটা আসামিকেও কখনো জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো না। তাদের আটক করা হলো না। হত্যা মামলার আসামি হলে তো সঙ্গে সঙ্গে আটক করা হয়। এরপর আইন যা বলবে তা-ই হবে। কিন্তু তা হয়নি।’
পিবিআই প্রধান বনজ কুমার সম্পর্কে নীলা চৌধুরী বলেন, ‘তাদের সঙ্গে বনজ কুমারের সম্পৃক্ততা ছিল। এই বনজ কুমারকে তারা অনেক টাকা দিয়েছে। সুকুমার রঞ্জন নামে একজন সংসদ সদস্য ছিলেন, তিনি ভারতীয় ‘র’-এর এজেন্ট। তিনি আমাকে হুমকি দিয়েছিলেন। সালমান শাহ মৃত্যুর পর আমরা জেনেছিলাম যে ভারতীয় কাউকে ভাড়া করে এনে সালমান শাহকে হত্যা করিয়েছে তারা।’
এম.কে
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪